ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়কের বিরুদ্ধে বাসায় ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার (৬ই মার্চ) পৌরসভা ৮নং মিঠাপুর কলেজপাড়া মো. আরফিন মোল্লার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মিলন এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে এক কলেজ ছাত্রী অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা ডিগ্রী কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী বাদী হয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল আল মিলন(২৬), রবিউল ইসলাম( ৩৫), সোহেল শেখ(৩৫) এর নামে থানাতে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঐ কলেজ ছাত্রী আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস এর এক কর্মীর সাথে গত জানুয়ারি মাস থেকে প্রেমের সম্পর্ক চলতে থাকে। এক পর্যায় তাদের সম্পর্ক বিবাহে পর্যন্ত গড়ায়। গত ২৪ শে ফেব্রুয়ারি বিবাহের দিন ধার্য থাকে । পরিবারের সম্মতি না থাকায় ফায়ার সার্ভিসের অফিসে ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও কলেজ ছাত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। এর মাঝে ছাত্রদলের আহবায়ক মিলনের মধ্যস্থতায় কলেজ ছাত্রীকে ফায়ার কর্মীর সাথে বিবাহ দিয়ে দেয়ার আশ্বাসে বাসায় পাঠিয়ে দেয়।
এক পর্যায় প্রেমিক বিয়ে করতে অস্বীকার করায় মিলন মীমাংসার নামে আড়াই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীর নিকট থেকে।পরে ওই কলেজ ছাত্রীকে আবল তাবোল ও ভয় ভীতি দেখিয়ে ১০০ টাকার ৩ টি স্ট্যাম্পে মীমাংসার স্বাক্ষর করে নেন। পরবর্তীতে টাকা না দিয়ে মোবাইলে প্রেম ও হোয়াটস এ্যাপে বিভিন্ন কু প্রস্তাব দিতে থাকে।
গত ৬ মার্চ দুপুরে টাকা দেয়ার কথা বলে বাসার রুমে ভিতরে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে কথাবার্তা বলে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মেলামেশা করার জন্য শ্লীলতাহানি ঘটায় ও স্পর্শকতর স্থানে হাত দেয়।
ডাকাডাকি করলে পার্শ্ববর্তী লোক উপস্থিত হলে কৌশলে পিছনের দরজা দিয়ে বের করে দেয় কলেজ ছাত্রীকে ।
উপজেলা বিএনপি সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক খসবুর রহমান খোকন বলেন,ছাত্রদলের আহ্বায়ক মিলনেরএমন ঘটনার নিন্দা জানাই। আমি সংবাদ পেয়ে মিলনের বাড়িতে গিয়ে শতাধিক জনতা পুলিশ ও সাংবাদিক দেখতে পাই এবং সত্যতাও পাই। ও দলের সাইনবোর্ডে বেপরোয়া হয়ে কয়েকদিন আগে চরডাঙ্গা নদী বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের চাঁদার দাবিতে গাড়ির চাবি নিয়ে আসে।গত বছর মাদক সেবন ও বিক্রির অভিযোগ জেল খেটেছিল। কয়েক বছর আগে একই পাড়ায় ফাতেমার মা নামে এক বৃদ্ধা মহিলা মানুষটি মেরেছিল। শুধু তাই নয় মিলন ওর মা বাবার গায়েও হ্ত তলো। এ কারনে ওর বাড়িতে কেউ থাকে না।এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক স্থগিত কমিটির সদস্য সচিব খুশবুর রহমান খোকন বলেন সকল অভিযোগ সত্য তারেক রহমানের আদর্শ ও নির্দেশ অমান্য করে মিলন বেপরোয়া হয়ে গেছে। কলেজ ছাত্রীকে বিবাহ না দিয়ে আড়াই লক্ষ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে এমন ঘটনা ন্যক্কার ও দুঃখজনক ঘটনা। দল থেকে এখনি এদের মত অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক আব্দুলাহ আল মিলন বলেন, ঐ মেয়ে শালিশের টাকার জন্য বাসায় এসেছে।আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এ বিষয়েকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য ও পরিকল্পিত ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেছে।এটা মিথ্যা ভিত্তিহীন বানোয়াট।বিএনপি সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোসবুর রহমান খোকন আমার উপর ও বাড়িতে হামলা চালায়।
আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ হারুন অর রশিদ বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনা স্থলে আমার পুলিশ পাঠিয়ে ছিলাম। কলেজ ছাত্রীর ধর্ষণ চেষ্টা একটি অভিযোগ পেয়েছি,তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চরডাঙ্গা চাঁদার দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন মিলন চাবি নিয়ে এসেছিল। তাদের কোন অভিযোগ নেই,পরে চাবি ফেরত দিয়েছি।
ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সৈয়দ আদনান হোসাইন অনু সভাপতি বলেন এই ঘটনার ভিডিও আমার মোবাইলে এসেছে এবং ফেসবুকে দেখেছি। এটা ষড়যন্ত্র না সত্য খতিয়ে দেখব। অনেক সময় দলকে বিপক্ষে প্রোপাগন্ডা ছড়ায়, তবে সত্য হলে দলের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।