তিস্তাপাড়ের মানুষের মুখে হাসির রেখা দেশের উত্তরাঞ্চলের খরস্রোতা তিস্তা নদীর কড়ালগ্রাসে লক্ষ লক্ষ মানুষ সর্বস্রান্ত ও ভিটেমাটি হারা হলেও যুগেরপর যুগ ধরে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নেই তেমন কোনো স্থায়ী নদী শাসনের সুব্যবস্থা!
অপরদিকে ভারতের সাথে বার-বার তিস্তার পানি চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার কারণে বর্ষার প্রবল তিস্তা শুষ্ক মৌসুমে অনেকটাই মরুভূমিতে পরিনত হয়,যার ফলে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প ‘তিস্তা সেচপ্রকল্প’ তার লক্ষ মাত্রা অর্জনে অপারগ হওয়ার পাশাপাশি নদীর অববাহিকায় বসবাসরত কৃষকেরা পানির চরম সংকটে উর্বর ভূমিতেও পরেনা কাঙ্ক্ষিত ফসল ফলাতে,এর ফলে দেশজ উৎপাদনে পরে নেতিবাচক প্রভাব এবং খাদ্য সংকটের কারণে দেশকে হতে হয় অনেকটাই আমদানি নির্ভর।
বন্যা-নদীভাঙ্গন থেকে মুক্তির সাথে সাথে প্রয়োজন তিস্তার স্রোতধারা অব্যাহত রাখার জন্য প্রস্তাবিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন।সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের তথ্যমতে, পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার যথেষ্ট আন্তরিক হলেও ভূরাজনৈতিক এবং বাণিজ্যিক রাজনীতির কারণে বিশেষ দেশের সাথে মতানৈক্যের ফলে পরিকল্পনাটি আজও আলোর মুখ দেখতে পারেনি।
আমরা তিস্তা নদীর অববাহিকায় বসবাসরত মানুষ দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তাবিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জোড়ালো দাবী পেশ করে আসছি। অবশেষে, চীনা রাষ্ট্রদূতের প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনকে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের আভাস হিসাবে মনে করছেন তিস্তাপাড়ের অসহায় মানুষেরা।
তিস্তার চরাঞ্চলসহ বৃহৎ রংপুর অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবী হলো- দ্রুত প্রস্তাবিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে নদীগর্ভ থেকে হাজার হাজার হেক্টর ভূমি উদ্ধার করার মাধ্যমে বন্যা-নদীভাঙ্গন থেকে মানুষকে স্থায়ী মুক্তি দেওয়া, বেকারত্ব দূরীকরণ, দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা এবং আমদানির পরিবর্তে খাদ্য রপ্তানি দেশে রুপান্তর করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করা।
আমরা আশাবাদী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের বর্তমান সময়কালে প্রস্তাবিত তিস্তা মহাপরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন শুরু করে উত্তরাঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষের সকল জল্পনা -কল্পনাকে অবসান করে সরকারের ইতিবাচক ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হবেন।