প্রথমত: নবী (সা) এর সঠিক জন্ম তারিখ অকাট্যভাবে জানা যায় নি।রাসুল (সা) রবিউল আওয়াল মাসের ৯ তারিখে জন্ম গ্রহণ করেন। রবিউল আওয়ালের ১২ তারিখ নয়। সুতরাং ১২ রবিউল আওয়াল ঈদে মীলাদুন নবী পালন করা ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভিত্তিহীন।
দ্বিতীয়ত: শরী‘আতের দিক থেকে যদি মীলাদ মাহফিল উদযাপন করা সঠিক হতো, তবে নবী (সা) তা করতেন অথবা তাঁর উম্মতকে করতে বলতেন। আর কুরআনে বা হাদীসে অবশ্যই তা সংরক্ষিত থাকতো।
আল্লাহ বলেন,
“আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতরণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।” [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৯]
যেহেতু মীলাদের বিষয়টি সংরক্ষিত হয় নি, তাই বুঝা গেল যে, মীলাদ মাহফিল উদযাপন করা দীনের কোনো অংশ নয়। আর যা দীনের অংশ নয়, তা দ্বারা আল্লাহর ইবাদাত এবং নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা বৈধ নয়। কীভাবে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারব, আল্লাহ তা বলে দিয়েছেন। তা হলো নবী (সা) কর্তৃক নিয়ে আসা দীন। বিরাট অপরাধ। আল্লাহর কালামকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার শামিল।
আল্লাহ বলেন,
“আজকের দিনে তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম। তোমাদের উপর আমার নি‘আমতকে পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দীন হিসাবে মনোনীত করলাম।” [মায়েদা: ৩]
অতএব, আমরা বলব যে, এ মীলাদ মাহফিল যদি পরিপূর্ণ দীনের অংশ হতো, তাহলে অবশ্যই নবী (সা) মৃত্যুর পূর্বেই তা বলে যেতেন। আর যদি তাঁর দীনের কোনো অংশ না হয় তবে রাসূল (সা) এর মৃত্যুর পর তা দীনের অংশ হতে পারেনা। যারা বলে মীলাদ মাহফিল পরিপূর্ণ দীনের অংশ, তবে বলতে হবে তা রাসূল (সা) এর মৃত্যুর পরে শরী‘আতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তাহলে এটা হবে আল্লাহর কথাকে মিথ্যা বলার শামিল।
কোনো সন্দেহ নেই যে, যারা মীলাদ মাহফিল উদযাপন করে, তারা রাসূল (সা) এর সম্মান এবং ভালোবাসার জন্যই করে থাকে। রাসূলকে ভালোবাসা, তাকে সম্মান করা সবই ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত। শুধু তাই নয়, কোনো মানুষের কাছে যদি নবী (সা) তার সন্তান, পিতামাতা এবং দুনিয়ার সমস্ত মানুষ হতে প্রিয় না হয়, তা হলে সে পূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না। যেহেতু নবী (সা) এর ভালোবাসা ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত, তাই এর ভিতরে বিদ‘আত তৈরি করা জায়েয নেই। তাছাড়া আমরা শুনতে পাই যে, এ মিলাদ মাহফিলে এমন বড় বড় অপছন্দনীয় কাজ হয়, যা শরী‘আত বা কোনো সুস্থ বিবেকও সমর্থন করে না।
আল্লাহ্ সঠিক বুঝার তৌফিক দান করুন।
আল্লাহুম্মা আমিন!!