ইয়ুথ পাওয়ার পটুয়াখালী স্বেচ্ছাসেবক এর সাহায্য নিয়ে ঋতু সংগঠনের সার্বিক সহযোগিতায় ঋতু স্যানেটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়।

রিপোর্টঃ সাজ্জাতুল ইসলাম পটুয়াখালী
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২
51.8kভিজিটর

পটুয়াখালী জেলার কাঠপট্টি ঘনবসতি এলাকায় কিশোরীদের সাথে বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, বয়ঃসন্ধি এবং ঋতুচক্র নিয়ে আলোচনা করা হয়। Wreetu সংগঠন এর সহযোগীতায় ৬০ জন কিশোরীদের মাঝে পুনঃব্যবহারযোগ্য ঋতু স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়েছে।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী পৌরসভা সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর মোসাঃ নাহিদা আক্তার পারুল।
দেশের বেশিরভাগ স্কুল-কলেজের টয়লেট মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় উপযোগী নয়। নারী ও মেয়েদের মধ্যে স্যানিটারি প্যাডের ব্যবহার বাড়লেও মাসিকের সময় ব্যবস্থাপনায় রয়ে গেছে অনেক সমস্যা। স্কুলে পর্যাপ্ত পানি সরবারহের অভাব, পরিস্কার টয়লেটের ঘাটতি, গোপনীয়তার অভাব স্কুলগামী মেয়েদের জন্য এসময়টি আরো জটিল করে তোলে। এতে বাড়ছে স্কুলে মেয়েদের অনুপস্থিতির হার। সরকার স্কুলগুলোকে মাসিকবান্ধব করে তুলতে প্রজ্ঞাপন জারি করলেও বাস্তবতা ভিন্ন।
ওয়াটার এইডের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের ৮২ শতাংশ স্কুলে মাসিক ব্যবস্থাপনায় যথাযথ কোনো সুযোগ নেই। একারণে শিক্ষার্থী অনুপস্থিতির হারও বেশি থাকে।
অপরদিকে, ইউনিসেফ এর তথ্যানুযায়ী, জীবনের প্রথম মাসিকের অভিজ্ঞতা অনেক মেয়ের কাছেই ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতা। কারণ এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য থাকে না, এমনকি মায়েরাও কন্যা সন্তানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন না।


২০১৪ সালের বাংলাদেশ ন্যাশনাল হাইজিন বেসলাইন সার্ভে থেকে জানা যায়, দেশের ৪০ শতাংশ মেয়ে মাসিক ঋতুচক্রের সময়ে তিনদিন স্কুল যায় না এবং এই ৪০ শতাংশের তিনভাগের এক ভাগ মেয়ে জানিয়েছে, স্কুল কামাই দেওয়ার কারণে তাদের লেখাপড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনও মাত্র দশ শতাংশ নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে আর বাকী ৮৬ শতাংশ নারী ব্যবহার করে পুরাতন কাপড়। অপরদিকে, মাত্র ৬ শতাংশ মিন্সট্রুয়াল হাইজিন ম্যানেজমেন্ট সর্ম্পকে স্কুলে জানতে পারে।

স্কুলে টয়লেটগুলোতে কাপড় পরিবর্তন করার সুযোগ ও ব্যবহৃত ন্যাপকিন ফেলার ব্যবস্থা না থাকা, মেয়েদের জন্য আলাদা কমনরুম না থাকা, মাসিকের রক্ত লেগে যাওয়ার ভয়, সহপাঠীরা টিজ করবে সেই লজ্জায় মাসিকের দিনগুলোতে স্কুলে যেতে এমনকি ঘর থেকে বের হতেও অস্বস্তিবোধ করে অনেক মেয়েই। অথচ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি ছয় ঘণ্টা অন্তর ন্যাপকিন পাল্টানো দরকার। তা না হলে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে এবং নানা রোগ দেখা দিতে পারে।
বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের মাসিক হওয়াটা স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় একটি প্রক্রিয়া। স্বাভাবিক প্রক্রিয়াটিকেই সমাজে অনেক ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ বিষয় হিসেবে ভাবা হয়। ফলাফল হিসেবে জরায়ুমুখ ও প্রজনন অঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ দেখা দেয়।


২০১৩ সালে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ওয়াটার এইড-এর সহায়তায় ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশ’ বা আইসিডিডিআর,বি ৭০০ স্কুলের ২,৩৩২ জন ছাত্রীরও সাক্ষাৎকার নেয়। ছাত্রীদের ৬৪ শতাংশ জানায়, প্রথমবার মাসিক হওয়ার আগে তারা এ বিষয়ে জানত না। আর প্রায় ৮৬ শতাংশ জানায়, তারা মাসিকের সময় পুরোনো কাপড় ব্যবহার করে। দেখা যায়, বাংলাদেশের মাত্র ১ শতাংশ স্কুলে ব্যবহার করা প্যাড ফেলার ব্যবস্থা আছে। ওই জরিপে ৪১ শতাংশ ছাত্রী জানায়, মাসিকের কারণে গড়ে মাসে তারা তিনদিন স্কুলে যেতে পারে না।
স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম বেশি
বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশের প্রথম স্যানিটারি ন্যাপকিন ‘সেনোরা’। বর্তমানে মোনালিসা, ফ্রিডম, জয়া, স্যাভেলন এবং ইভানাসহ নানা ব্র্যান্ডের প্যাড পাওয়া যায়।

প্রতিটি কোম্পানির স্যানিটারি ন্যাপকিনের মূল্য দরিদ্র শ্রেণির নারীদের সামর্থ্যওে বাইরে। এছাড়া সামর্থ্য থাকার পরও অনেকেই সচেতনতার অভাবে এর পেছনে অর্থ ব্যয় করতেও নারাজ।
তাই সবার কথা মাথায় রেখেই ঋতু সংগঠন নিয়ে এসেছে ঋতু স্যানেটারি প্যাড।
১২ পিরিয়ড সাইকেল বা ১ বছর ব্যবহারযোগ্য এই ন্যাপকিনের প্রধান তিনটি বৈশিষ্ট্য ঃ
১. কোন ব্লীচ, কেমিকেল নাই তাই স্বাস্থ্যসম্মত।

র‍্যাশ বা চুলকানির ভয় নাই।
২. সাশ্রয়ী যেহেতু ১২ মাসে ১২০-১৫০ টাকা করে প্রতিমাসে খরচ করতে হচ্ছে না।
৩. পরিবেশবান্ধব যেহেতু কাপড় তাই মাটিতে মিশে যায় সহজেই যেখানে বাজারেরগুলোর ৫০০-৮০০ বছর লাগে।
তাছাড়া এই ন্যাপকিনের কাপড় সফট এবং নিচের পার্ট ওয়াটাপ্রুফ। ব্লিডিং যতই হোক লিকেজের ভয় নেই।
যা যা থাকছে এক প্যাকেটেঃ
১. ৫টি কোর প্যাড যা বডিকে টাচ করে থাকে।
২. ২টি ব্যাকিং (স্ন্যাপ বাটন লাগানোগুলো)।
৩. ১টি ওয়াটারপ্রুফ কাপড়ের ব্যাগ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
কপিরাইট ©২০০০-২০২২, WsbNews24.com এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত।
Desing & Developed BY ServerNeed.Com
themesbazarwsbnews25
x