ঝালকাঠিতে যুবদল নেতার বাড়িতে প্যান্ট পরে প্রবেশ করায় চড়থাপ্পড়
মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরে যুবদল নেতার তাণ্ডবে ৯ দিন থেকে একটি পরিবার এলাকা ছাড়া। এ ঘটনায় অজ্ঞাত কারণে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের নাইয়াবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। যুবদল নেতার নাম মো. মনির হোসেন মোল্লা। সে ঐ এলাকায় মৃত সুলতান মোল্লার ছেলে ও গালুয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। সরেজমিনে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় নারী-পুরুষ মনির মোল্লার বিরুদ্ধে এলাকায় মেয়েদের উত্ত্যক্তসহ চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন। স্থানীয় জেলেরা নিয়মিত মাছসহ চাঁদা না দিলে এলাকা ছাড়া করতে মনির মোল্লা তার বাহিনী নিয়ে তার পিছে লেগে যায়।
স্থানীয়রাসহ ভুক্তভোগী পরিবারটি থেকে জানাগেছে, মৃত চান্দে আলী খলিফার ছেলে মো. সোহরাব হোসেন খলিফা একজন পল্লীচিকিৎসক। একমাস পূর্বে সোহরাব খলিফা স্থানীয় যুবদল নেতা মনির মোল্লার পাশের ঘরে অসুস্থ্য এক রোগীকে ইনজেকশন দিতে যায়। ইনজেকশন দিয়ে বের হওয়ার সময় মনির মোল্লা সোহরাবের পথ আগলে জিজ্ঞেস করে তোর বাপ মাছ বিক্রি করতো তুই কেন আমার বাড়িতে প্যান্ট পরে প্রবেশ করছিস? পরে মনির সোহবারকে চড়থাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দেয়।
সোহরাব বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিকে জানায়। এতে মনির মোল্লা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে দেশীয় অস্ত্র রামদা, দাও নিয়ে তার দুই ভাগিনা কোমর উদ্দিন, নেসার উদ্দিন সহ তার বাহিনী নিয়ে ২৯ অক্টোবর সকালে সোহরাব ও তার ছোট ভাই সোহাগ খলিফার ওপর হামলার চেষ্টা করলে তারা পালিয়ে যায়। পরে মনির তার বাহিনী নিয়ে সোহবারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসতঘরের মালামাল ভাংচুর করে।
এ সময় সোহরাবের স্ত্রী শান্তা ভাংচুরে বাধা দিলে তার শ্লীলতাহানীসহ তাকে মারধর করে। এরপর থেকে মনির মোল্লার ভয়ে সোহরাবসহ তার স্ত্রী, ছোট ভাই সোহাগ ও তার স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েরা পলাতক রয়েছে। মনির মেল্লার ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। ভুক্তভোগী পরিবারটি ৯৯৯ এ ফোন দিলে এলাকায় পুলিশ এসে অভিযুক্ত মনির মোল্লার সাথে কথা বলে চলে যায়। তবে মনির মোল্লা কি বলে তাদের ম্যানেজ করে তা বলতে পারেনা স্থানীয়রা। পরে তারা চলে যায়। সোহরাবসহ তার পরিবার কোনদিন এলাকায় আসতে পারবে না, আসলে মনির মোল্লা তাদের মেরে ফেলবে বলেও স্থানীয়রা আরো জানায়।
ভুক্তভোগী সোহরাবের মা জানায়, গত দুই বছর আগে মনির মোল্লা আমার ছোট মেয়েকে ঘর থেকে রাতে তুলে নিতে টানাহেচরা করায় ঐ রাতেই মেয়ে নিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেই। এখন আবার আমার ছেলে-স্ত্রীসহ তাদের ছেলে-মেয়েদের এলাকা ছাড়া করেছে। তারা কি আর বাড়িতে আসতে পারবে না। আমার জমিটুকু কেউ কিনে নেক আমি অন্যত্র চলে যাব।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত যুবদল নেতা মো. মনির হোসেন মোল্লা জানায়, সোহরাব ও তার ছোট ভাই এলাকায় রেকটিফাইড বিক্রয় করায় সোহরাবকে মাত্র দুইটা চড়থাপ্পড় দিয়েছি।
রাজাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ পুলক চন্দ্র রায় বলেন, এলাকা ছাড়া কিনা তা জানিনা, তবে জমিজমা নিয়ে জামেলা রয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ