চট্টগ্রামে আলিনা ইসলাম আয়াত নামের পাঁচ বছরের এক শিশুকে হত্যা ও এরপর লাশ টুকরো করার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার আবির মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো পরিদর্শক ইলিয়াস খান সাংবাদিকদের বলেন, আসামি আবিরকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত দুই দিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে শুক্রবার নগরের ইপিজেড এলাকা থেকে আবিরকে আটক করে পিবিআই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, শিশু আয়াতকে অপহরণ করে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু তাঁর মুঠোফোনের সিম কাজ না করায় শিশুটির পরিবারকে ফোন দিতে পারেননি। নিজে ধরা পড়ে যাবেন এ ভয়ে শিশুটিকে কেটে ছয় টুকরো করে সাগরে ভাসিয়ে দেন। ভারতীয় টিভি সিরিজ ক্রাইম পেট্রোল ও সিআইডি দেখে আবির এ কাজ করার কথা স্বীকার করেন, আমাদেরকে জানান পিবিআই
আবিরের বাবা ভ্যানচালক আজহারুল ইসলাম শিশু আয়াতের বাসায় ভাড়া থাকেন। তাঁর মা আলো বেগম পোশাক কারখানা শ্রমিক। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ায় আলো বেগম ইপিজেড এলাকার আকমল আলী রোড এলাকায় অন্য বাসায় থাকেন। মা ও বাবার দুটি বাসাতে যাতায়াত ছিল আবিরের।
শিশু আয়াতকে অপহরণ করে তার পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা আবির দুই মাস আগে করেন। আর মুক্তিপনের টাকা দিয়ে নিজের ও মায়ের জন্য কিছু করার ইচ্ছা ছিল বেকার আবিরের।
গত ১৫ নভেম্বর নগরের ইপিজেড থানার বন্দরটিলা ওয়াজ মুন্সিবাড়ি এলাকার সোহেল রানার মেয়ে আয়াত বাসার পাশে একটি মক্তবে বিকেলে পড়তে যায়। পরে পরিবার জানতে পারে শিশুটি মক্তবে যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ইপিজেড থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। গত শুক্রবার জিডিটি নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলায় রূপান্তর করা হয়। এতে অজ্ঞাত পরিচয় তরুণকে আসামি করা হয়।
পেশায় মুদি দোকানদার আয়াতের বাবা সাংবাদিকদের বলেন, আমার পরিবার এখন এমন ব্যবস্থায় আছেন আপনাদেরকে বুঝাইতে পারবো না ‘জানাজা পড়ার জন্য মেয়ের লাশটাও পাইনি। মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।’
আমার আদরের ছোট শিশু আয়াত কে টুকরো টুকরো করে কেটে সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে কি ক্ষতি করছিল আমার মেয়েটা নিষ্ঠুর খুনিদের কাছে জানতে চান শিশুটির বাবা।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ