চট্টগ্রামের ইপিজেড থানাধীন ৩৯ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ হালিশহর এলাকায় পাঁচ বছরের শিশু আলিনা ইসলাম আয়াতকে হত্যা করে ছয় টুকরা করে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার মামলায় আসামি আবির মিয়ার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন।
গত ২৫ নভেম্বর নগরের ইপিজেড এলাকা থেকে আবিরকে আটক করে পিবিআই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, শিশু আয়াতকে অপহরণ করে ছয়-সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু তাঁর মুঠোফোনের সিম হটাৎ করে কাজ না করায় শিশুটির পরিবারকে ফোন দিতে পারেননি। নিজে ধরা পড়ে যাবেন, এ ভয়ে শিশুটিকে কেটে ছয় টুকরা করে সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে এই আবির। ভারতীয় টিভি সিরিজ ক্রাইম পেট্রোল ও সিআইডি দেখে আবির এ কাজ করার কথা স্বীকার করেন। পরদিন তাঁকে আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
নির্বাক মা, বাবা ছুটছেন লাশের টুকরার খোঁজে
রিমান্ড শেষে নতুন করে আবার আবিরকে আরও ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পিবিআই। শুনানি শেষে আদালত আরও সাত দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে আবিরকে আদালতের নিচে আনা হলে ক্ষুব্ধ জনতা তাঁর ফাঁসি চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে তাঁকে এজলাসে নিয়ে যায়।
পিবিআই পরিদর্শক ইলিয়াস খান সাংবাদিকদের বলেন, আবিরকে নিয়ে লাশের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করতে গতকাল রোববার সাগরপাড়ে অভিযান চালানো হয়, কিন্তু কিছু পাওয়া যায়নি। এ জন্য তাঁকে রিমান্ডে এনে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গত ১৫ নভেম্বর বিকেলে আয়াত বাসার পাশে একটি মক্তবে পড়তে যায়। পরে পরিবার জানতে পারে, শিশুটি মক্তবে যায়নি। উৎকণ্ঠায় থাকা পরিবার ১০ দিন পর গত শুক্রবার জানতে পারে, আয়াত খুন হয়েছে পরিচিত আবির মিয়ার হাতে। ঐ শিশু আয়াত তাঁকে ‘চাচ্চু’ বলে ডাকতেন।
আবিরের বাবা ভ্যানচালক আজহারুল ইসলাম আয়াতদের বাসায় ভাড়া থাকেন। তাঁর মা আলো বেগম পোশাক কারখানা শ্রমিক। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ায় তিনি ইপিজেড এলাকার আকমল আলী রোড এলাকায় অন্য বাসায় থাকেন। মা ও বাবার দুটি বাসায় যাতায়াত ছিল আবিরের।
এলাকাবাসী এই শিশু হত্যার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।