চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিদর্শনকালে সিএমপি কমিশনার পরীক্ষার্থীদের এক ঘণ্টা আগে বাসা থেকে বের হওয়ার তাগিদএক দশক পর আগামী ৪ ডিসেম্বর নগরীতে বাংলাদেশের উজ্জ্বল নক্ষত্র আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা হতে যাচ্ছে।
নগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে এই জনসভা নিয়ে চলছে জোর প্রস্তুতি। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা পড়তে চলেছে চট্টগ্রাম নগরী। গতকাল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় পলোগ্রাউন্ড মাঠ জনসভাস্থল পরিদর্শনকালে জানিয়েছেন,
প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিকে ঘিরে নগরজুড়ে সাড়ে সাত হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এ জন্য তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে। এসময় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনও সেখানে ছিলেন।
মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, প্রবেশপথ থেকে জনসভাস্থলে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাঁশ দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে সীমানা। ভ্রাম্যমাণ টয়লেট, সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। মূল মঞ্চের সীমানায় পুলিশ অবস্থান নিয়ে কাউকে ভেতরে যেতে দিচ্ছে না। এসএসএফ এর সদস্যদের তদারকি দেখা
গেছে। সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ উৎসবমুখর পরিবেশে প্রধানমন্ত্রীর এই কর্মসূচি সম্পন্ন করার জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা চান।
প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশ মোতায়েন ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে জানিয়ে সিএমপি কমিশনার বলেন, সর্বোচ্চ ফোর্স কখন মোতায়েন হবে, এটা আমরা পাবলিকলি ওপেন করি না। এ বিষয়ে আমাদের কাছে নির্দেশনা যেভাবে এসেছে এবং আমাদের যে পরিকল্পনা আছে, সেভাবেই কাজ করবো। পুলিশ এখন থেকেই নিরাপত্তার কাজ করছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স। তাদের তত্ত্বাবধানে এবং পরামর্শক্রমে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন থাকবে। সিএমপিতে আমাদের ছয় হাজারের মতো অফিসার–ফোর্স আছে। এর অধিকাংশই বিভিন্নভাবে সিকিউরিটির সাথে সংযুক্ত থাকবে।
বাইরে থেকে দেড় হাজার ফোর্স সিএমপিতে যুক্ত থাকবে। এসএসএফ, পিজিএফ, সাদা পোশাকের পুলিশ, ইউনিফর্মের পুলিশ, গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। নিরাপত্তায় আর্চওয়ে, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, ড্রোনসহ প্রযুক্তিগত সকল কিছু যুক্ত থাকবে।
প্রযুক্তি এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিচ্ছি। শুধু পলোগ্রাউন্ডেই পুলিশ থাকবে না, পুরো শহর একটি নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে।
জনসভার দিন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা গাড়ি নিয়ে, মিছিল নিয়ে জনসভায় আসবেন, তারা কোথায় গাড়ি থেকে নামবেন, মিছিল কোথায় থামবে– সেটা আমরা জানিয়ে দেব।
একটি বিষয় হচ্ছে– জনসভার দিন কিন্তু সকাল এবং বিকেলের শিফটে পরীক্ষা আছে। দুই শিফটে এক হাজার চারশর মতো করে পরীক্ষার্থী আছে। জনসভাস্থলের পাশেও একটি পরীক্ষা কেন্দ্র আছে। শব্দযন্ত্র এমনভাবে স্থাপন করা হবে, যাতে সেখানে কোনো সমস্যা না হয়।
পরীক্ষার্থীরা যেন একটু আগেভাগে বাসা থেকে বের হন। এরপরও কেউ আটকে গেলে কিংবা সমস্যায় পড়লে ট্রিপল নাইনে ফোন করে আমাদের জানালে পুলিশ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করবে। নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ, হাতে অন্তঃত এক ঘণ্টা সময় নিয়ে যেন সবাই বাসা থেকে বের হন। জনসভার আগে লাইসেন্সধারী অস্ত্র জমা নেয়ার একটি নির্দেশনা পাবার কথা জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার।
জনসভার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের হুমকি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের যে সক্ষমতা, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা থাকেন, তাদের সক্ষমতার নিরিখে এটা আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি, প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে কোনো হুমকি নেই, কোনো হুমকি সৃষ্টি করারও কোন কৌশল অবলম্বন করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ