পূর্ববর্তী ব্যাচের ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের আগেই পরবর্তী ব্যাচের একই সেমিস্টারের পরীক্ষা গ্রহণের মতো অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়, রংপুরের একটি বিভাগে। বিষয়টি জেনে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বিস্ময় প্রকাশ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় নি। বরং সংশ্লিষ্ট লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বলছেন শিক্ষার্থীদের জন্যই এই অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়, রংপুরের লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের এমএসএস দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা-২০২০ কয়েক মাস আগে অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পর উক্ত ফলাফল গত ৬ ডিসেম্বর ২০২২ অফিসিয়ালি প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এর আগেই ১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ হতে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের এমএসএস দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা-২০২১ শুরু হয়েছে যা পুরোপুরি নিয়ম বহির্ভূত এবং অনিয়ম।
ঈরীক্ষা নিয়েন্ত্রণ দপ্তর সূত্র জানায়, কোন একাডেমিক সেশনের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের আগে কোনোভাবেই পরবর্তী একাডেমিক সেশনের ওই নির্দিষ্ট সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা গ্রহণের কোন সুযোগ নেই।
যদি সেটি করা হয় তাহলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ পরীক্ষার বিধি অনুযায়ী কোন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হলে কিংবা মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে চাইলে তাকে অবশ্যই পরবর্তী ব্যাচের সাথেই ওই সেমিস্টারের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২০ ও ২০২১ সালের এমএসএম ২য় সেমিস্টার পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে যার ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে।
২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, কয়েক মাস আগেই আমরা ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করলেও সময় মত আমাদেও ফলাফল প্রকাশ করা হয় নি। ফলে আমরা মাস্টার্সের সনদেও অভাবে বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করতে পারছিলাম না। উক্ত ব্যাচের এক সাংবাদিক নেতার জন্য ফলাফল দীর্ঘদিন আটকে রাখা হয়েছিল বলেও অভিযোগ কনের ওই শিক্ষার্থী।
কারণ মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়ে গেলে উক্ত সাংবাদিক বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যপদ হারাবেন।
তাকে বেশিদিন রাখার সার্থেই এমনটা করা হয়েছে বলে জানান ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। তবে তারা নাম প্রকাশ করতে আগ্রহী না।
পূর্ববর্তী ব্যাচের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের আগেই পরের ব্যাচের পরীক্ষা শুরু করার বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মোঃ মতিউর রহমান বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এটা কোনোভাবেই সম্ভব না। এটার জন্য নিয়ম বোঝার দরকার নেই। কোন
পরীক্ষার্থী ফেল করলে কিংবা ইমপ্রæভমেন্ট দিতে চাইলে তার কী অবস্থা দাড়াবে! পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর কীভাবে অনুমতি দিয়েছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক সময় বিভাগ থেকে প্রস্তাব আসলে আমরা দ্রæত ছেড়ে দেই হয়তো সেকারনে এটা খেয়াল করা হয় নি। তাছাড়া ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তওে আসলে কখনোই পাঁচ থেকে ছয় কার্যদিবসের বেশি লাগে না। স্বাভাবিকভাবেই এটা মাথায় আসে নি। তবে ওই বিভাগ কেন এমনটা করেছে তারাই সেটা ভালো বলতে পারবে।
নিয়ম বহির্ভুতভাবে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমরা যা করি স্টুডেন্টদের ভালোর জন্য করি। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা পূর্ববর্তী ব্যাচের ফলাফল প্রকাশের আগেই পরীক্ষা শুরু করেছি। এটা যদি নিয়ম বহির্ভূত হয় স্টুডেন্টদের কল্যাণের জন্য কাজ করতে গিয়ে, আমার কিছু করার নেই।