এবার বাণিজ্য মেলায় পুরোদমে স্টল নির্মাণের কাজ চলছে। মিস্ত্রিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। স্টল মালিকরাও ভোর থেকে রাত পর্যন্ত স্টল নির্মাণের কাজ দেখাশোন করছেন। ঠুকঠাক শব্দে মেলা প্রাঙ্গন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। দম ফেলার সুযোগ নেই তাদের।
মেলার আশপাশের মানুষ স্টল নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করছেন। পুরোদমে ফিরেছে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম। তাই মেলা এবার জমে উঠবে বলে এখানকার ব্যবসায়ীরা মনে করছেন। করোনা মহামারি কাটিয়ে উঠায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এবার মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে ২৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। গত বছরের ন্যায় এবারও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার প‚র্বাচল উপশহরের ৪ নম্বর সেক্টরে স্থায়ী প্যাভিলিয়ন বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে হবে এই মেলা। প্রথম দিন থেকেই মেলা জমিয়ে তুলতে চান ব্যবসায়ীরা। তাই আগেই স্টল নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছেন তারা। আর স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা।
এবারের বাণিজ্য মেলায় ১২ টি দেশের ২৫০ টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৪২টি প্যাভিলিয়ন, ৩১টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ২৩৮টি জেনারেল স্টল, এবং ২৩টি খাবারের দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অত্যাধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এক্সিবিশন সেন্টারের এক লাখ ৫৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের দু’টি হলে সব স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
গতবারের মতো এবারও মেলায় প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা। অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ফ্রি। প্রদর্শনী কেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২২০ টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, ইরান, ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ ১২টি দেশ বাণিজ্য মেলায় অংশ নেবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক মোঃ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, সময় মতো স্টল বরাদ্দ দেওয়ায় নির্মাণকাজ যথাসময়ই শেষ হবে। এদিকে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ৩০০ফিট মূল সড়কটির কাজও প্রায় সমাপ্তির পথে।
রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মেলায় আসতে দর্শনার্থীদের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মেলার আশা যাওয়ার সড়কের সংস্কার কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এবারও দর্শনার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে চালু করা হবে বিআরটিসির স্পেশাল সার্ভিস। এবার বাণিজ্য মেলা জমজমাট হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু কর্ণার তৈরির কাজ চলছে। থেমে নেই মেলার প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলোর নির্মাণ কাজ। নির্মাণ শ্রমিকদের কথা বলার ফুসরত নেই। বেশির ভাগ স্টলের নির্মাণকাজ দ্রæতগতিতে এগিয়ে চলছে। স্টিলের কাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ। স্টলে বোর্ড লাগানো ও রং দেওয়ার কাজ চলছে। কোন কোন স্টলের কাঠামো দাঁড় করানোর কাজও চলছে। উদ্বোধনের আগেই স্টল নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হবে বলে জানান মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
মি. বাইটের সত্বাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার খোকন বলেন, স্টল নির্মাণ কাজ ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। করোনা মহামারি কাটিয়ে এবার সুপরিকল্পিত ভাবে বাণিজ্য মেলার এবারের আসর বসবে। সময় মতো প্যাভিলিয়ন ও স্টল বরাদ্দ এবং ব্যবসায়ীরা তৎপর হয়ে উঠায় মেলা প্রাঙ্গন এখনই সরগরম। এবার মুখরিত হয়ে উঠবে বাণিজ্য মেলা।
সেভয় আইসক্রিমের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার রাহাতুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান মেলায় ২ হাজার ৫০০ বর্গফুটের একটি প্যাভিলিয়ন নিয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়।
বেঙ্গল পলিমার প্যাভিলিয়নের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মোঃ এমরান হোসেন বলেন, প্যাভিলিয়নের দ্বিতীয় তলার নির্মাণ কাজ চলছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।
মিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের এমডি ইসহাক মিয়া বলেন, স্টল বরাদ্দ যথাসময় হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে প্যাভিলিয়ন তৈরির কাজ করা যাচ্ছে।।