এ যেন কুয়াশায় ঢাকা শীতের চাদরে দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ। মাঠজুড়ে ফসলের সমারোহ। এবার শীতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করা হয়েছে। ফসলের ভালো ফলন পেয়ে কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি।
শীতের ফসল হিসেবে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, ধনেপাতা, সীম ও টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে ভালো ফলন ও দাম পেয়ে রূপগঞ্জের কৃষকদের মনে লেগেছে আনন্দের ছোয়া। উপজেলার মুড়াপাড়া, গঙ্গানগর, দড়িয়াকান্দি, হাটাবো, মিঠাবো, কান্দাপাড়া, মাসাবো, তেতলাবো, পশ্চিম গাও, মাঝিপাড়া, পাচাইখা, বলাইখাসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সবুজ শাক-সবজি ও ফসলে যেন ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অগ্রহায়ণের শেষের দিকে চাষ করার পর পৌষ মাস শেষ না হতেই সবজি চাষের ধুম পড়েছে রূপগঞ্জের চরগুলোতে। মাঠের দিকে তাকালে মনে হয় যেন সবুজের সমন্বয়ে বাতাসে দোল খাওয়ার মতো কৃষকদের মনও দোলছে। সবুজ চাদরের সোনালী আভায় গোটা প্রান্তর হয়ে উঠেছে মুগ্ধকর।
এ যেন একটি সবুজ দিগন্ত। চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত থেকে উপজেলার হাজারো দিনমজুর, শ্রমিক, সার-কীটনাশক ব্যবসায়ী, পাইকারি ও ফড়িয়াদের পরিবারের অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসার জোগান আসছে। কেউ চাষ করছে ফুলকপি তো কেউ করছে বাঁধাকপি। কেউ ফসলে পানি দিচ্ছে তো কেউ আবার আগাছা পরিষ্কার করছে। এ যেন পাল্লা দিয়ে সবজি চাষে মেতে উঠেছে কৃষকেরা। চাষকৃত সবজিগুলো বড় হতেই তা তুলে বিভিন্ন ছোট-বড় হাটে নিয়ে যাওয়া হয় বিক্রির জন্য।
জানা গেছে, রূপগঞ্জে কাঞ্চন পৌরসভার কালনি এলাকায় জনপ্রিয় একটি সবজির পাইকারি বাজার রয়েছে। ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত এখানে সবজি কেনা বেচা করা হয়। বাড্ডা, যাত্রাবাড়ি, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে ক্রেতারা আসেন পাইকারি সবজি কেনার জন্য।
রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার সবজি চাষীরা বলেন, ‘গত বছরের মতো এবারও আমরা মৌসুমী ফসল ফুলকপি, গাজর, টমেটো, বাঁধাকপি, মুলা, সীম, ধনেপাতা ও মুলা-শাকসহ অনেক রকমের শাক-সবজি চাষ করছি। আশা করছি অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আরো বেশি ফলন ঘরে তুলতে পারবো।
করোনার কারণে দীর্ঘ সময় শিল্প কারখানা বন্ধ থাকায় আবহাওয়া পরিবর্তন হয়েছে। যার ফলে এবার ফসল আগের তুলতায় অনেক বেশি উৎপাদন করতে পেরেছি। কম খরচে বাড়তি আয়ের জন্য কৃষকদের মধ্যে সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে এবং এ বছর তারা সবজি চাষে বাম্পার ফলন পাবে বলে আশা করছেন।
এব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার ফাতেহা ন‚র বলেন, রূপগঞ্জ একটি সবজি প্রধান উপজেলা হিসেবে সব জায়গায় পরিচিত। সারাবছরই এখানে ভালো সচজি পাওয়া যায়। আমাদের ইউসুফগঞ্জ, দাউদপুর, কাঞ্চন, জাঙ্গীর এসব বøগগুলো সবজি চাষ করা হয় বেশি। আমরা সব সময় চেষ্টা করছি কৃষকদের ভালো প্রশিক্ষণ, বীজ, সার দেওয়ার জন্য। কারণ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রূপগঞ্জ থেকে সবজি নেওয়া হয়। তাই আমরা চেষ্টা করছি আমাদের এই খ্যাতি ধরে রাখার জন্য।