মেহেরপুরের গাংনীতেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা।এতে বিপাকে পড়েছে উপজেলার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।ঘনকুয়াশা আর তীব্র শীতের কারণে রাস্তায় চলাচল করতে অসুবিধায় পড়েছে দিনমজুর,যান বাহন চালক ও পথচারীরা।
শীতের মৌসুম অনেক আগেই শুরু হয়েছে তবে শীতের তীব্রতা তেমন ছিল না। জনশ্রুতি আছে বছরের সবচেয়ে শীতল মাস পৌষ মাস।এবছর পৌষের শুরুতেও ছিল না তেমন শীতের তীব্রতা। তবে ১ম সপ্তাহ পরেই পৌষের হাড়কাঁপানো শীত শুরু হয়েছে। আর এই কনকনে শীতে বিপাকে পড়েছে খেটেখাওয়া, দিনমজুর সহ নিম্ন আয়ের মানুষরা।শীত বস্ত্রের অভাবে কাবু হয়ে পড়ছেন অনেক শিশু ও বৃদ্ধরা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টাও করছেন তারা।শীতে গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে গরু খামারিদের।
সকাল থেকেই কাজের সন্ধানে বেরিয়া পড়ছে শ্রমিক, ভ্যান চালক, দিনমজুর ও ব্যবসায়ী।
চককল্যানপুর গ্রামের দিনমজুর মহিবুল ইসলাম বলেন,প্রতিদিন সকালে ইটভাটায় কাজে যেতে হয় যতই কুয়াশা বা শীত পড়ুক না কেন।কারণ কাজ করলে আমাদের মুখে ভাত উঠবে।ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করে তাদের খরচ জোগাতে হয়।
উপজেলার বাওট গ্রামের নাহারুল ইসলাম বলেন, সকাল বেলা শীতের পোষাক খুলতেই বেলা ১২ টা বেজে যাচ্ছে। মাঠের কাজ করবো কখন। সময়ের কাজ সময়ে করতে না পারলে তো আবাদের ক্ষতি হবে।
দেবীপুর গ্রামের নারী দিনমজুর আদুরি খাতুন বলেন,এই কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশায় কাজে যাওয়া যে কি কষ্টকর তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়।তবে পরিবারের মুখে একমুঠো ভাত তুলে দিতে পারলে সমস্ত দুঃখ কষ্ট ভুলে যায়।তবে আজকে খুব বেশি শীত এবং ঘন কুয়াশা পড়েছে।
আরেক নারী দিনমজুর রোজিনা খাতুন বলেন,প্রতিদিন সকালে একটি পাতলা চাদর গায়ে জড়িয়ে কাজে যেতে হয় কারণ একটু ভালো পোশাক পরবো অভাবের সংসারে তা আর হয়না।মাথায় চিন্তা থাকে পরিবারের মুখে একমুঠো ভাত তুলে দিতে হবে। সারাদিন কাজ করে পায় মাত্র ২০০ টাকা মজুরী।একটু ভালো পোশাক কিনবো টাকা পাব কোথায়।আমাদের আবার কিসের কুয়াশা আর কিসের শীত।কাজ করলে মুখে ভাত উঠবে না করলে উপোস থাকতে হবে।
ভ্যানচালক ইমারুল ইসলাম বলেন,ঘন কুয়াশা আর শীত পড়লে ভাড়া অনেক কমে যায় কারণ অনেকেই ঘর থেকে বের হতে পারে না।কিন্তু আমাদের তো পেটে টান পড়ে ঘরেও থাকতে পারি না। তাই ভাড়ার জন্য বের হতে হয় রাস্তায়।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন জানান,ঘন কুয়াশা আর প্রচন্ড শীতে জুবুথুবু হয়ে পড়ছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো।আর এই ঘন কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলার যত্ন নিতে হবে।আর ধানের চারার যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য চারার মাথার শিশির গুলো ফেলে দিতে হবে।