ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাভা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে একটি জনগুরুত্বপূর্ন সড়কের সংস্কার কাজ স্থানীয় এক পরিবারের বাঁধার কারনে বন্ধ হয়ে আছে দের বছর ধরে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ঐ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজারো গ্রামবাসীরা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে যানাযায়, বিগত ২০ বছর পূর্বে ২০০১ সালে হেরিংবনসহ এই সড়কে চলাচলের জন্য একটি বক্স কালভার্ট নির্মান করে দিয়েছিলো স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়। প্রায় দেরহাজার মিটার দৈর্ঘ্যরে এই সড়কটি সংস্কারের জন্য ১৮-১৯ অর্থ বছরে টেন্ডার করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রকৃয়া শেষে রামচন্দ্রপুর গ্রামের কাঁচাবালিয়া থেকে গুদিঘাটা পর্যন্ত রাস্তাটির কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএম এন্টারপ্রাইজ।
তারা ঐ সময়ে কার্যাদেশ অনুযায়ী ১ হাজার ৪০০ মিটার রাস্তার কাজও শুরু করেছিলো। কিন্তু ১৪০০ মিটার কাজ সম্পন্ন করার পর বাকি থাকা ৭৫ মিটার সড়কের সংস্কার কাজ বন্ধ করে দেয় ঐ সড়ক সংলগ্ন সরদার বাড়ির লোকজন। রাস্তাটির জমির কিছু অংশ নিজেদের দাবী করে তারা সংস্কার কাজে আপত্তি জানায়। সরদার পরিবারের দাবী সড়কটি তাদের বাড়ির জমির ভেতর দিয়ে গেছে।
এই কাজের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ার দেড় বছর পাড় হয়ে গেলেও আজও ঝুলে আছে সড়ক সংস্কারের কাজ। আর এতে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনগনকে। এই সড়ক দিয়ে চলাচলকরা তিনটি বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা, তিনটি কলেজ, গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ এবং গুদিঘাটা বাজারসহ আশপাশের এলাকায় যোগাযোগের পথে জনসাধারনের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয় সরদার বাড়ির প্রবীন সদস্য হানিফ সরদার জানান, ‘রাস্তাটির এক অংশ আমাদের রেকর্ডিও সম্পত্তি। বছরের পর বছর এলাকার লোকজন হাটতে হাটতে এটি রাস্তায় পরিনত করেছে। রাস্তার অপরপাড় একটি খাল রয়েছে, সেই খাল ভরাট করে রাস্তা নিলেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।’
রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা মোতাহার মাঝি জানান, ‘শত বছর ধরে এই রাস্তা দিয়ে গ্রামবাসীরা চলাচল করছে। রাস্তা সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার পর গ্রামের একটি মহল রাস্তার কিছু অংশ নিজেদের দাবী করে কাজটি বন্ধ করে রেখেছে। রাস্তার জায়গা যদি তাদেরই হয়, তবে কীভাবে কুড়ি বছর আগে সরকারি ভাবে হেরিংবন ও কালভার্ট নির্মান হলো?’
কলেজ ছাত্র সোহেব হোসেন জানান, ‘সড়কটির বেশিরভাগ কাজই সম্পন্ন হয়ে গেছে। বাকি আছে অল্প কাজ। আর এই সামান্য কাজ আটকে থাকায় এই রাস্তা দিয়ে রিকশা ভ্যান চলতে পারছে না। বর্ষকালে আমাদের কলেজে যাতায়াত করতে অনেক দূভোগ পোহাতে হয়।’
গুদিঘাটা বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাইদুল ইসলাম সবুজ জানান, ‘ স্কুল-কলেজ, বাজারসহ ঝালকাঠি-বরিশালের সাথে হাজারো মানুষের যোগাযোগের কথা বিবেচনা করে এ রাস্তাটি পাশ করিয়ে দেন ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু। দের বছর যাবত কাজটি বন্ধ থাকায় ভোগান্তির আর শেষ নেই।’
কাজের ঠিকাদার মিলন খন্দকার জানান, ‘বিষয়টি স্থানীয় ভাবে সমঝোতার জন্য আমরা গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়েও চেষ্টা করেছি। কিন্তু গ্রামের হানিফ সরদার, জলিল সরদার এবং ধলু সরদার গংরা জনগুরুত্বপূর্ন এ সড়কটি যাতে নির্মাণ না হতে পারে তার জন্য এ হীন ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজ বন্ধ থাকায় আমার সাইটে থাকা নির্মান সামগ্রীসহ অনেক মুল্যবান মালামালও চুরি হয়ে গেছে যা আমি ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবোনা।’
এ ব্যাপরে ১নং গাভা রামচন্দ্র ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গোলাম মাওলা মাছুম শেরওয়ানী জানান, ‘রাস্তাটি অত্যান্ত জনগুরুত্বপূর্ন। শত বছর ধরেই এ রাস্তাটি দিয়ে মানুষের চলাচল। রাস্তাটির বাকি কাজ সম্পন্ন করার ব্যপারে চেষ্টা চলছে।’