মরা খাল পুনরুজ্জীবিত করে কৃষিতে ভূ-পৃষ্ঠের পানির টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে যশোরে কাজ করছে নেদারল্যান্ডস সরকার। দেশটির অর্থায়নে বেসরকারি সংস্থা সলিডারিডাড ও জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের (সফল ফর আই ডব্লিউ আর এম) প্রকল্প ইতিমধ্যেই কৃষক পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
মঙ্গলবার এই প্রকল্পের অগ্রগতি দেখার জন্য নেদারল্যান্ডসের ছয় সদস্যের একটি সংসদীয় দল যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নের গাঙ্গুলিয়া খাল পরিদর্শন করেন। এসময় তাদের সাথে ঢাকাস্থ নেদারল্যান্ডস রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান ও সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইন্দু ভূষণ রয় জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচির পরিচালক মোঃ আজিজুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান জানান, গাঙ্গুলিয়া খাল খনন করে পার্শ্ববর্তী খেদাপাড়া বাওড়ের সাথে সংযোগ করে দেওয়ায় সারাবছরই এই খালে পানি পাওয়া যাচ্ছে। ফলে পার্শ্ববর্তী ৯৬০ একর জমি যেখানে বছরের বেশিরভাগ সময় জলাবদ্ধ থাকতো, সেসব জমির পানি এই খাল দিয়ে নেমে বাওড়ে চলে যাচ্ছে। ফলে এসব জমিতে সারাবছরই ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে।
আবার শুষ্ক মৌসুমে এই খালের পানি দিয়েই ফসল ফলানো যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আগে ৯৬০ একর জমিতে বছরে একটি ফসল ফলতো, এখন সেখানে তিনটি ফসল ফলবে, এমনকি উঁচু জমিতে চারটি ফসলও ফলছে। কৃষি উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি এই প্রকল্পের ফলে ভূ-পৃষ্ঠের পানির ব্যবহার বাড়ছে। একই সাথে ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার অনেক কম হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভূ-পৃষ্ঠের পানি পুরোপুরি ব্যবহার না করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকাস্থ নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন বলেন, বাংলাদেশের কৃষিসহ বিভিন্ন সেক্টরে নেদারল্যান্ডস সরকার অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে সহযোগিতা করে আসছে। যেহেতু এসব ফান্ড নেদারল্যান্ডসের সংসদে পাস হয়, সেকারণে সেখানকার একটি সংসদীয় দল এই কাজগুলো পরিদর্শন করতে এসেছেন। সংসদীয় দলের সদস্যরা প্রকল্পের সরাসরি সুবিধাভোগী কৃষকদের সাথে কথা বলেছেন। বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছেন। সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।