নওগাঁয় মিথ্যা ধর্ষণের মামলা করায় স্বামী-স্ত্রীর পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। স্ত্রীকে দিয়ে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা দায়ের করায় নওগাঁর সাপাহার থানার নুরপুর গ্রামের আবদুল হক মন্ডলের ছেলে আফসার আলী ও তার স্ত্রী মনোয়ারা খাতুনকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থ দন্ড এবং অনাদায়ে তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বেগুন গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে জেলার সাপাহার থানার সাপাহার গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিন মন্ডলের ছেলে ওসমান গনির সাথে আফসার আলীর গন্ডগোল হয়। গন্ডগোলের সূত্র ধরে মনোয়ারা খাতুনকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আফসার আলী তাকে দিয়ে ওসমান গনির বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের ৬ এপ্রিল সাপাহার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, ২০০৫ সালের ৫ এপ্রিল সন্ধ্যা আনুমানিক ৭.৪৫ মিনিটে সাপাহার বাজার হতে উকিলপাড়া যাওয়ার পথে তিলনা রোডের জনৈক আফিল উদ্দিনের বাড়ির নিকট পৌঁছলে ওসমান গনি পিছন দিক থেকে মনোয়ারা খাতুনকে জাপটে ধরে রাস্তার পূর্ব পাশে চাতালের মধ্যে নিয়ে যেয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা আছে মর্মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। উভয় পক্ষের সাক্ষ্য প্রমান শেষে ২০১৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আদালত বেগুন গাছ কাটা বিবাদ ধরে এই মামলাটি মিথ্যা ভাবে দায়ের করা হয় পর্যবেক্ষন দিয়ে ওসমান গনিকে আদালত খালাস প্রদান করেন।
পরবর্তীতে ওসমান গনি ২০১৩ সালে ১১ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা দায়ের করায় আফসার আলী ও মনোয়ারার বিরুদ্ধে আদালতে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। দুই পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আদালত আফসার ও মনোয়ারা খাতুন উভয়কেই পাঁচ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও বিশ হাজার টাকা অর্থ দন্ড অনাদায়ে তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করার রায় ঘোষণা করেন নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার।
আদালতে উপস্থিত আফসার আলীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয় এবং তার স্ত্রী মনোয়ারা খাতুনের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা সহ গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করা হয়। রাষ্ট্র পক্ষে বিশেষ পি.পি এ্যাডভোকেট মোঃ মকবুল হোসেন ও আসামী পক্ষে এ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল লতিফ মামলা পরিচালানা করেন ।
ওসমান গনি এপ্রতিবেদক কে জানান, বিজ্ঞ আদালতের এ রায়ের মধ্যদিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর ফলে এধরনের মিথ্যা হয়রানি বন্ধ হবে। এ রায়ে আমি সন্তুষ্ট।