বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি গেল ঈদের আগে ও পরের মোট ১৫ দিনে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জনের মৃত্যুর যে তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে জানিয়েছে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ।
বিআরটিএ বলছে, ওই সময়ে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ২৫৩টি, আর মৃত্যুর সংখ্যা ২৩৯টি। গতকাল বুধবার (০৪ মে) সংগঠনটির প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে তালিকা চেয়ে যাত্রী কল্যানের কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছে বিআরটিএ।
এ বিষয়ে বিআরটি চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, সংস্থার কর্মীরা ৬৪টি জেলা থেকে তথ্য পাঠায়। পুলিশ, জেলা প্রশাসন থেকেও তথ্য সংগ্রহ করে। এতে হতাহতের সংখ্যার পার্থক্য এত হওয়ার কথা নয়।
তিনি আরো বলেন, মাঝেমধ্যে গণমাধ্যমেও হতাহতের সংখ্যা ভুল আসে। সংগঠনটির তথ্য বিভ্রান্তিকর। চিঠিতে আগামী ০৩ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতিকে তাদের প্রতিবেদনে আসা সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য যথা- দুর্ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান, নম্বরসহ গাড়ির বিবরণ, নাম ঠিকানাসহ নিহত ব্যক্তির তালিকা সংস্থাটির কাছে পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (সাধারণ) আবদুল আউয়াল স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কর্তৃক স্থাপিত কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা ছিল ১৭ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত। তাই ঈদযাত্রাকে সর্বোচ্চ ৯ দিন বিবেচনা করা যায়। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সংগঠনটি ঈদ ছুটি ১৫ দিন কীসের ভিত্তিতে ঘোষণা করেছে তা জানার পাশাপাশি প্রকৃত দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা অতিরঞ্জিত ও মনগড়া বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও বিআরটিএ’র প্রতিবেদনের চেয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার সংখ্যা ৫১টি, নিহত সংখ্যা ৮৯ জন ও আহত সংখ্যা ৫৫ জন অতিরিক্ত দেখানো হয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন মূলত গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদবের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল বিআরটিএতে এ বিষয়ে একটি বৈঠকে কেবল গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে পরিসংখ্যান প্রকাশ না করে সরেজমিনে যাচাই-বাছাইয়ের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা একমত হয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেছে চিঠিতে।
প্রতিষ্ঠানগুলোর একেক রকম তথ্য জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে বলেও মন্তব্য বিআরটিএ’র। সংস্থার দাবি, গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে অনেক সময় ভুল হয়। তাই তা যাচাই করা উচিত।
আর যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, তারা যে তথ্য তুলে ধরেছে, সেটি কোনোভাবে বেশি হওয়ার সুযোগ নেই। সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, যে ভাষায় চিঠি দেওয়া হয়েছে তা হুমকির শামিল। বরং সরকারের উচিত আমাদেরকে সহযোগী হিসেবে নিয়ে পরামর্শ দিতে পারে। যখনই দূর্ঘটনার তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখনই বিআরটিএ বার বার চিঠি দিয়ে তথ্য চায়,অনেকবার তথ্য দিয়েছি কোন তথ্যের ভুল ধরতে পারল না। বিআরটিএ চায় যাত্রী কল্যান সমিতি তথ্য প্রকাশ না করুক। তারা যাত্রী কল্যান সমিতিকে তারা সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়। যাত্রী কল্যান সমিতি সরকারের প্রতিপক্ষ কিংবা প্রতিদদন্ধি নয়, সরকারের সহায়ক হিসাবে কাজ করতে চাই, জনগন যাতে সঠিক তথ্যটি পায়,এবং তা থেকে উত্তোলনের উপায় খুঁজে বের করা যায়।