নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় লালন সংগীতের আখড়াবাড়ি পুলকিত আশ্রমে সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আশ্রম এবং বাদ্যযন্ত্র ভাংচুর করে সন্ত্রসীরা। এই ঘটনায় তিনজন বাউল শিল্পী আহত হয়েছেন।
রবিবার (৭ মে) দুপুরে উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নের ভাবলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ছবির কমেন্ট বক্সে তুমুল নিন্দা জানাচ্ছেন নেটিজেনরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পুলকিত আশ্রমের দায়িত্বে আছেন জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়া। তার সঙ্গে পূর্ব শত্রুতা ছিলো হামলাকারী শেখ জাহাঙ্গীর এবং শাহীনের। তারা তিনজন সম্পর্কে চাচাতো মামাতো ভাই।
আরো জানা গেছে, সোমবার (৮ মে) পুলকিত আশ্রমে সাধুসঙ্গের দিন আগে থেকে ধার্য ছিলো। সে উপলক্ষে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধু-ফকির, বাউল শিল্পীরা আগে থেকেই আশ্রমে উপস্থিত হচ্ছিলেন। রবিবার দুপুরে শেখ জাহাঙ্গীর এবং শাহীনের নেতৃত্বে ৫/৬ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্রসহ জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়াকে খুঁজতে আশ্রমে আসেন। জাহাঙ্গীরকে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা আশ্রমে হামলা শুরু করলে তাদের বাঁধা দেন বাউল শিল্পীরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আগত শিল্পীদের উপর হামলা চালায় তারা। এ সময় ৩ শিল্পী আহত হয়েছেন। তাদের সঙ্গে থাকা সব বাদ্যযন্ত্র ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে লালন সংগীতকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যই এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবী করছেন কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লালন শিল্পীরা। তারা বলেন, হামলাকারী কাউকে আমরা চিনি না। আমরা এখানে গান করছিলাম। হঠাৎ তারা এসে আমাদের মারধর করেন এবং আমাদের যন্ত্র ভেঙ্গে দেয়। আমরা এর বিচার চাই।
পুলকিত আশ্রমের দায়িত্বে থাকা জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়া বলেন, দেশিয় অস্রসহ লালন সংগীতের শিল্পীদের বাদ্যন্ত্র ভাংচুর এবং শিল্পীদের উপর হামলা করে তিনজনকে আহত করা হয়েছে। আমি এর চূড়ান্ত শাস্তি দাবি করি।
ফেসবুকে নিন্দা জানিয়ে প্রবীর কুমার নামে একজন লেখেন, পূর্ব শত্রুতার জের শুধুই উছিলা। যেদিন লালনের ভাস্কর্য টেনে হিঁচড়ে নামিয়েছিল ওরা এবং যার কোন বিচার হয়নি, সেদিনই বুঝেছিলাম, আসছে দিন খারাপ। ভাল দিন চলে গেছে আর আসবে না।
এ ঘটনায় বেলাব থানার ওসি তানভীর আহমেদ বলেন, ঘটনার খরব পেয়ে সকালেই আখড়া ধামে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। দুপুরে আমি নিজেই জায়গাটি পরিদর্শন করেছি। এই ঘটনাটি উস্কানিমূলক কোনো বিষয় কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনও কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। তবে আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।