ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে জোরপূর্বক জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক সেনাকর্মকর্তার বিরুদ্ধে। উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের আরাজি শিবানন্দপুর গ্রামের মো.পান্নু ফকিরের আরাজী শিবানন্দপুর ৭৫ নং মৌজার ৪১ নং খতিয়ানের ৮ শতাংশ দলিলকৃত জমি জোরপূর্বক দখল করে ভোগদখলে করেছেন একই গ্রামের বাসিন্দা সাবেক সেনা সদস্য মো. ইসমাইল দেওয়ান।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মো. পান্নু ফকিরের মা মোছা. শুকুরন নেছা হেবা মূলে পান্নু ফকিরের নামে আরাজী শিবানন্দপুর ৭৫ নং মৌজার ৪১ নং খতিয়ানের ৮ শতাংশ জমির দলিল করে দেন। এ জমি অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মো. ইসমাইল দেওয়ান জমি ভাড়া নেয় । তবে সে এখন জমির মালিক দাবী করে দখল করে রেখেছেন। জমি থেকে কোন প্রকার সরতে সে নারাজ। দলিল মূলে ওই ৮ শতাংশ জমি মিউটেশন করা হয়েছে পান্নু ফকিরের নামে। এ জমি দখল মুক্ত করতে পান্নু ফকির থানায় সাধারণ ডায়রিও করেছেন।
পান্নু ফকির জানান, ৪১ নং খতিয়ানের ৮ শতাংশ জমি আমার বাবার। বাবা সেই জমি ১৯৯৮ সালে আমার মা শুকুরন নেছার নামে দলিল করে দেন। তার আগে আমার চাচা ডা. আবুল কালাম আজাদ ১৯৯৮ সালের ৩০ জুন আমাদের জমি প্রতি বছর পাঁচশো টাকা ভাড়ায় বোয়ালমারী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মুক্তার ঠাকুর ও হালিম মাতবরের নিকট ভাড়া দেন। সে জমি দখল করে রাখেন সাবেক সেনা সদস্য ইসমাইল দেওয়ান।
তবে ৩৩ খতিয়ানে একই দাগের থেকে মজি মুন্সি নামের এক জনের কাছ থেকে ৩ শতাংশ ও লাল মিয়ার কাছ থেকে ২ শতাংশ মোট ৫ শতাং জমি পশ্চিম পাশ থেকে আমার মায়ের নামে লিখে দেন। সাবেক সেনা সদস্য ইসমাইল সে ৫ শতাংশ জমি একই দিনে তার নামে লিখে নেয়। তবে ৪১ নং দাগের ৮ শতাংশ জমি আমার মা শুকুরন নেছার নামে থেকে যায়। সে জমি আমার মা আমার নামে ২০১৫ সালে দলিল করে দেন। সে জমিতে পেশী শক্তির জোরে সাবেক সেনা সদস্য দখল করে রাখেন। যেটা আইনের বহির্ভূত কাজ।
মো. পান্নু ফকিরের ভাই মো. মুন্নু ফকির বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত ভেজালের কারণে ইসমাইল দেওয়ান আমার নামে মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প তৈরী করে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সাতৈর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. আমির হোসেন মাতবর বলেন, মুন্নু ফকিরের বিরুদ্ধে আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়ার কথা বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা মিথ্যা। পান্নু ফকির ও ইসমাইল দেওয়ানের জমি নিয়ে ভেজালের জের ধরে তার ভাই মুন্নু ফকিরকে দমাতে এ মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন ইসমাইল দেওয়ান।
এ বিষয়ে সাবেক সেনা সদস্য ইসমাইল বলেন, ২০০২ সালে আমি এই জমি দখল করি। এখন প্রতিপক্ষরা তাদের জমি দাবী করে ভোগদখল করতে চাই। তাই আমি এ জমি নিয়ে কোর্টে একটি মামলা দায়ের করি। এ জমিতে বর্তমান ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মামলা চলমান।
বোয়ালমারী থানা পুলিশ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।