ঝালকাঠির ছত্রকান্দা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পুকুরে পড়ে যাত্রীবাহী বাসের ১৭জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় ২৪ ঘন্টা পার হলেও এখনো থানায় কোন মামলা হয়নি। তবে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন সরকার জানান, বাস দুর্ঘটনার ঘটনায় এখন পর্যন্ত স্বজনদের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। হতাহতের স্বজনরা অভিযোগ দায়ের করবেন আমরা সেই অপেক্ষায় আছি। আর যদি কেউ অভিযোগ না করে তাহলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবে।
এদিকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই নিহত ১৭ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. এইচএম জহিরুল ইসলাম। এছাড়া আহত ৩৫ জনের মধ্যে ৩৩ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশালের শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তারা চিকিৎসা নিয়ে তারা সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মেহেদী হাসান সানি জানান, আহত দুই জন ব্যক্তি মো. জলিল ও তার স্ত্রী মিনারা বেগম এখনও ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তাদের অবস্থা শঙ্কা মুক্ত।
এদিকে পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, বাস দুর্ঘটনার ২৪ ঘন্টায়ও পার হলেও এঘটনায় রবিবার (২৩জুলাই) বেলা ৩টা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বাস দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের সাথে এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা আহতদের সাথে একাধিকবার কথা বলা হয়েছে তারা কেউই মামলা করতে আগ্রহী না থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। আমরা আরও কিছু সময় অপেক্ষা করব এর মধ্যে কেউ মামলা করতে আগ্রহী না হলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবে। দূর্ঘটনাটির কারন কারো গাফিলতি কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অন্যায় কারীদের ছাড় দেয়া হবে না।
এদিকে জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিজুম বলেন, দূর্ঘটনার কারন জানতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মামুন শিবলিকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রট মামুন শিবলী জানান, কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত বাসযাত্রীদের সাথে কথা বলা হয়েছে। গাড়ির ফিটনেসসহ কাগজ সঠিক ছিল কিনা বা চালকের কোন গাফলতি ছিল কিনা এছাড়া অন্য কোন কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে কী না, তা তদন্ত সম্পন্ন না হলে বলা যাচ্ছে না।