সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের কলকতখাঁ গ্রামের মৃত আব্দুল্লাহ”র ছেলে আদম ব্যবসায়ী রুহুল আমীন ও তার চাচাতো ভাই ইউপি সদস্য মো. আক্তার হোসেন গং কর্তৃক বিদেশের নামে দুজনের নিকট হতে ৮লাখ টাকা আত্মসাত এবং টাকা ফেরত চাইতে গেলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিও হুমকির প্রতিবাদে ভূক্তভোগী ও গ্রামবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার দুপুর ১২টায় ভূক্তভোগীর স্বজন ও কলকতখাঁ গ্রামবাসীর আয়োজনে কলকতখাঁ বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুই শতাধিক লোকজন অংশগ্রহন করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন,ভূক্তভোগীর আপন মামা কলকতখাঁ গ্রামের বদরুল ইসলাম,ফজলুল হক গোলাপ,সালিশ ব্যক্তিত্ব তাজ উদ্দিন,ইজ্জত উল্ল্যাহ,মাষ্ঠার ওসমান গণি,সুজিত কুমার তালুকদার,সতীন্দ্র দাস,আলী হোসেন,আশরাফ মিয়া,সালিশ ব্যক্তিত্ব আব্দুস ছোবাহান,বুরহান উদ্দিন,কলকতখাঁ বাজার সিএনজি স্ট্রেশনের ম্যানেজার আব্দুস সামাদ,আশিক মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন,২০২২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউয়িনের ডুংরিয়া গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে তানজির আহমদ, ও শিমুলবাক ইউপির আক্তাপাড়া গ্রামের মাষ্ঠার ওসমান গণির ছেলে সালমান আহমদকে লিবিয়া হয়ে ইটালী নিবে বলে তাদের আপন মামা বদরুল ইসলামের মাধ্যমে কলকতখাঁ গ্রামের আদম ব্যবসায়ী রুহুল আমীন,ভীমখালি ইউপি সদস্য আক্তার হোসেন,তার সহোদর মাষ্ঠার আনোয়ার ,রুহুলের মা আম্বিয়া বেগম ও দিলার হোসেনের নিকট নগদ ৮ লাখ টাকা তুলে দেন। এই টাকা দিয়ে আদম ব্যবসায়ী রুহুল আমিন ও তার চাচাতো ভাই ঝুনু মিয়াকে নিয়ে তিনি কাউকে না জানিয়ে গোপনে তারা ইটালীতে পাড়ি জমান। ভূক্তভোগী বদরুল ইসলামের এক ভাগিনা তানজির আহমদ লিবিয়াতে গিয়ে মাফিয়া চক্রের হাতে ধরা পরলে এবং খবর পেয়ে ভূক্তভোগী ও কলকতখাঁ গ্রামের তাদের মামারা টাকা দেয়ার একবছর অতিবাহিত হওয়ার পর গ্রামের সালিশ ব্যক্তিদের নিয়ে আদম ব্যবসায়ী রুহুল আমিন গংদের বাড়িতে গিয়ে পাওনা টাকা চাইলে আদম ব্যবসায়ীচক্ররা উল্টো টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেন।
এ ঘটনায় দালালচক্রের হোতা ভীমখালি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আক্তার হোসেন বাদি হয়ে চলতি বছরের গত ২৭ জুলাই বিদেশে যাওয়ার নামে প্রতারনার স্বীকার ভূক্তভোগীদের মামা,কলকতখাঁ গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে ফজলুল হক গোলাপ,মৃত আব্দুল বারিকের ৪ ছেলে বদরুল ইসলাম,নজরুল ইসলাম,আমিরুল ইসলাম,জহুরুল ইসলাম,আব্দুল হামিদের ছেলে আশরাফ,মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে গোলাম হোসেন ও মৃত মান উল্ল্যাহ”র ছেলে ধন মিয়াকে আসামী করে আমল গ্রহনকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৮৫/২০২৩ইং।
এ ঘটনা নিয়ে গ্রামের সালিশ ব্যক্তিরা একাধিকবার দুপক্ষের বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য কয়েক দফা সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও কোন প্রকার সুরাহা হয়নি।
এ ঘটনায় ভূক্তভোগীদের মামা কলকতখাঁ গ্রামের বদরুল ইসলাম বাদি হয়ে সম্প্রতি আদম ব্যবসায়ীদের মাতা কলকতখাঁ গ্রামের মৃত আব্দুল্লাহ মিয়ার সহধর্মিনী আম্বিয়া বেগম,ইটালীতে পলাতক আদম ব্যবসায়ী রুহুল আমিন,ওয়াহিদ উল্ল্যাহ”র ছেলে ভীমখালি ইউপি সদস্য আক্তার হোসেন,তার সহোদর আনোয়ার মিয়া,জামাল উদ্দিনের ছেলে দিলার মিয়া এই পাচঁজনকে আসামী করে জামালগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে ভক্তভোগীর আপন মামা বদরুল ইসলাম জানান,প্রায় একবছর পূর্বে আমার দুই আপন ভাগিনাকে লিবিয়া হয়ে ইটালী পাঠানোর জন্য আমাদের কলকতখাঁ গ্রামের আদম ব্যবসায়ী রুহুল আমিন ও তার চাচাতো ভাই ইউপি সদস্য আক্তার গংদের হাতে নগদ ৮ লাখ টাকা উল্লেখিত ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে রুহুল আমিনের মা আম্বিয়া বেগমের হাতে সমজাইয়া দেই। কিন্তু আমার ভাগিনাদের দেওয়া টাকা নিয়ে আদম ব্যবসায়ী রুহুল আমিন ও তার চাচাতো ভাই ঝুনু মিয়া হঠাৎ দেশ ছেড়ে ইটালীতে পালিয়ে যায়। তিনি অবিলম্বে তাদের পাওনা টাকা ফেরতসহ আদম ব্যবসায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ সুপারের নিকট দাবী জানান।
এ ব্যাপারে আদম ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ঠ ইউপি সদস্য মো. আক্তার হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সহ রুহুল আমিন গংরা বিদেশে দুইজনকে নেওয়ার নামে ৮লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মীর মোঃ আব্দুন নাসের অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ