ঝালকাঠির রাজাপুরের ১১২ চর পালট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ ক্লাসের ২টিতে মাত্র ৬ শিক্ষার্থী উপস্থিত পাওয়া গেছে এবং ৫ম শ্রেণি ছিল শিক্ষার্থী শূণ্য। ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ ২ জন ছিল অনুপস্থিত।
গতবৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে
সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। স্কুলে সহকারি শিক্ষক শেয়ালি মমতাজ ও নুপুর আক্তারকে ক্লাসে পাওয়া গেলেও প্রধান শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মিটিং এবং রিনা বেগম ছুটিতে বলে জানা গেছে।
স্কুল সূত্র জানায়, স্কুলে মোট ২৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে প্রাক প্রাথমিকে দুই, ১ম শ্রেণিতে সাত, ২য় শ্রেণিতে চার, ৩য় শ্রেণিতে সাত, চতুর্থ শ্রেণিতে চার ও ৫ম শ্রেণিতে দুই শিক্ষার্থী রয়েছে। বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়ে ৫ম শ্রেণিতে কোন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি এবং ৩য় শ্রেণিতে তিন জন এবং ৪র্থ শ্রেণিতে তিন জন উপস্থিত দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক ও স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষক মাসের মধ্যে ১৩-১৫ দিন স্কুলে সঠিকভাবে আসেন না এবং কিন্তু নিয়মিত স্বাক্ষর দিয়ে রাখেন। তার অনুসারী শিক্ষকরাও সঠিকভাবে পাঠদান করান না। এ কারনে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষার গুনগতমান নেই। শিক্ষকদের মধ্যে পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধে, ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে বিরোধে স্কুলে স্থবিরতা বিরাজ করছে।
দাতা সদস্য আব্দুল হালিম বিশ্বাস ও সাবেক সদস্য নুরুজ্জামান ও জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষকদের মধ্যে অন্তদ্বন্ধের কারনে শিক্ষার পরিবেশ নেই। এ কারনে শিক্ষার মান নেই আর মান না থাকায় অভিভাবকরাও শিক্ষার্থীদের এ স্কুলে ভর্তি করেন না এবং শিক্ষার্থী দিনদিন কমে যাচ্ছে। এসব পরিস্থিতি নিরসনের জন্য শিক্ষা অফিসাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন ফল পাননি।
সাবেক সভাপতি মতিন জমাদ্দার জানান, শিক্ষকদের আচরন ও আন্তরিকতার অভাবে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি সন্তোষজনক না। শিক্ষার্থী নেই, সঠিক ভাবে পাঠদানও হয় না।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি সঠিকভাবেই স্কুলে যান এবং থাকেন। মিটিং ও অফিসের কাছে মাঝে মধ্যে রাজাপুর থাকতে হয়। এছাড়া প্রত্যান্ত চর এলাকা হওয়ায় শিক্ষার্থী কম।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কবির হোসেন জানান, সার্বিক পরিস্থিতি নিরসনে সভা আহবান করা হয়েছে। সভায় প্রয়োজনীয়
সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরজুদা বেগম জানান, শিক্ষার্থী-শিক্ষক উপস্থিতি বিষয়ে খোজখবর ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের আদাখোলা স্কুলে মিটিং হচ্ছে, প্রধান শিক্ষক এখানে রয়েছে।