ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের বারাংকুলা গ্রামের ইতালি প্রবাসী শাহাবুদ্দিন মোল্লার (২৬) বাড়িতে দুদিন ধরে স্ত্রী স্বীকৃতির দাবিতে অনশন করছেন ফরিদপুর নার্সিং কলেজের এক ছাত্রী (২১)। এ ঘটনার পর থেকে শাহাবুদ্দিন মোল্লার নতুন বিয়ে করা স্ত্রী ও বাড়ির অন্য সদস্যরা ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে ওই বাড়িতে অনশনে বসেছেন ওই তরুণী।
অনশনরত তরুণীর বাড়ি উপজেলার পাচুড়িয়া ইউনিয়নে যুগিবরাট গ্রামে। তিনি ফরিদপুর জেডএম নার্সিং কলেজের ডিপ্লোমা প্রথম বর্ষের ছাত্রী। অভিযুক্ত শাহাবুদ্দিন উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের বারাংকুলা গ্রামের উমর আলী মোল্লার ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ইতালি প্রবাসী শাহাবুদ্দিন মোল্লার বাড়িতে উপস্থিত হন ওই তরুণী। পরে নিজেকে শাহাবুদ্দিনের স্ত্রী দাবি করেন। বর্তমানে তিনি ওই বাড়িতে অবস্থান করছেন।
তরুণীর ভাষ্যমতে, ২০১৮ সাল থেকে শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। শাহাবুদ্দিন ইতালি থাকা অবস্থায় মোবাইলে নিয়মিত কথা বললেন। ভিডিও কলে কথা বলার সময় স্ক্রিন শর্ট এবং ছবি-ভিডিও সংরক্ষণ করতেন ওই প্রবাসী। পরে এগুলো ব্ল্যাকমেল করে তরুণীর বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন একাধিকবার। ২০২৩ সালে ইতালি থেকে দেশে আসেন শাহাবুদ্দিন।ফরিদপুর বিভিন্ন হোটেলে, আলফাডাঙ্গা কাশবন রেষ্টুরেন্টের পিছনে রুমে এবং আত্মীয় বাড়ি বিয়ের আগে পরে স্বামী স্ত্রী অন্তরঙ্গ সময় কাটিয়েছি। পরে ১৭ আগস্ট তিনি ওই তরুণীকে বিয়ে করেন।
তরুণী বলেন, ‘২৫ আগস্ট আমাকে কিছু না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন শাহাবুদ্দিন এবং আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। আমি কোনো উপায় না পেয়ে তার বাড়িতে চলে আসি। আমি স্ত্রীর মর্যাদা চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখানে আসার পর আমাকে মারধর করে আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে তারা সবাই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। আমি মরে গেলেও শ্বশুরবাড়ি থেকে যাবো না।’
ভুক্তভোগী তরুণীর মামাতো ভাই আকবর মিয়া বাঙ্গালী সময়কে বলেন, ‘আমার বোনকে মারধর করে তারা ঘরে তালা মেরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। গতকাল সকাল থেকে সে কিছুই খায়নি। তার কথা, আমি মরে গেলেও আমার স্বামী-শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে যাবো না।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে শাহাবুদ্দিন মোল্লার বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। আশপাশের লোকজনও তাদের খোঁজ জানাতে পারেননি।
তবে শাহাবুদ্দিনের চাচাতো ভাই তৈয়েবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগে পরে কী হয়েছে বলতে পারবো না। তবে গতকাল সকাল থেকে পাশের ইউনিয়নের একটি মেয়ে শাহাবুদ্দিনকে বৈধ স্বামী দাবি করে বাড়িতে অনশন করছে।’
বুড়াইচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব পান্নু জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছেলে-মেয়ের পরিবার থেকে আমাকে কেউ কিছু জানাননি। আমি অন্য মাধ্যমে শুনেছি। এ কারণে আমি এ নিয়ে মাথা ঘামাইনি।’
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের বাঙ্গালী সময়কে বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়। স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি দেখছেন। মেয়েটি যদি ওই ছেলের বৈধ স্ত্রী হন তাহলে আইনগত সহযোগী চাইলে আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ