নওগাঁয় অবৈধভাবে জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। জেলার মান্দা উপজেলার জামদৈই এলাকার বাসিন্দা মো: সাইদুর রহমান এ অভিযোগ করেন।
প্রতিপক্ষ ১.মোঃ গােলাম মােস্তফা (৪০) ২. মােঃ মােতালেব হোসেন উভয় পিতাঃ মােঃ জসিম উদ্দীন মন্ডল উভয় সাং-
জামদই ৩. মােঃ মজিদুল। ইসলাম (৩০), পিতাঃ জসিম উদ্দীন মন্ডল সাং-গােড়য়া ,থানা-মান্দা জেলা- নওগাঁ এর বিরুদ্ধে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বরাবর দায়েরকৃত ওই অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, অত্র থানাধীন জামদই মৌজা হাল দাগ- ১৩১২, সাবেক দাগ-৮১১ হাল খাতিয়ান নং- ৩৪১, সাবেক- খতিয়ান নং-৯০ হাল খতিয়ান নং- ৩৫১, সাবেক- খতিয়ান নং-৪৬৬ সম্পত্তি আমার কবলা ও খতিয়ানভুক্ত ।
উক্ত সম্পত্তি বিবাদীগনরা আমার প্রাপ্য সম্পত্তি জোর পূর্বক ভােগ দখল করার চেষ্টা করতেছে। ইতোপূর্বে জমি জমার দখল সংক্রান্তে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করলেও বিবাদীগণ কোন মিমাংসা মেনে নেয়নি। শুধুমাত্র জোর পূর্বক ভোগ দখলের চেষ্টা করতেছে। এমতাবস্থায় ইং-২৩/১০/২০২৩ তারিখ দুপুর অনুমান ০২.০০ ঘটিকার সময় উপরোক্ত বিবাদীগণ আমার নালিশী বর্নিত সম্পত্তি জোর পূর্বক জবর দখলের উদ্দেশ্যে সেখানে হালচাষ করে শরিষা বীজ বপন করে এবং আলু রােপন করে।
সংবাদ পেয়ে আমি সেখানে গিয়া বিবাদীদের জমি দখলের চেষ্টায় বাধা দিলে বিবাদীগণ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমি তাদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে বিবাদীগণ আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারপিট করার জন্য উদ্যত হয় এবং আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদান করে এবং জানায় যে,বিবাদীগণ আমার আরো জমি দখল করিবে এবং আমার জমি হতে আমার রোপনকৃত ধান কেটে নিবে। বিষয়টি নিয়া ইউপি সদস্য সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় তারা আইনের সহায়তায় নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। তাই
তফসিল ভুক্ত সম্পত্তি দখলকে কেন্দ্র করে সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে যে কোন সময় মারামারি সহ শান্তি
শৃংখলা ভঙ্গের আশংকা বিদ্যমান রয়েছে। ইতিপূর্বে উক্ত বিষয় নিষ্পত্তির জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে গ্রাম্য আদালতে বিচারকার্য শেষে রায় প্রকাশ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান সাক্ষরিত ওই রায়ে
প্রকাশ থাকে যে জাসিমের নিকট ত্রয়কৃত কবলাদার গণ নিজ হালে চাষাবাদ করে ফসল ভোগ দখল করতে পারবে। এতে জসিম বা তার কোন প্রাকার ওয়ারিসগন কোন প্রকার বাধা বা আপত্তী করতে পরবে না।
যদি কেউ কোন প্রকার বাধা প্রদান করে তাহলে আইন আদালতে দন্ডনীয় অপরাধ বলিয়া গন্য হবে। উক্ত রায় মেনে নিয়ে সুস্থ শরীরে সরল মনে সাক্ষর করেন বিবাদিগনদের পিতা জসিমউদদীন। কাজে আসেনি সে রায়, সম্প্রতি পুনরায় বিবাদীগনরা সঙ্ঘবদ্ধ এবং জোরপূর্বকভাবে জমি দখলের চেষ্টা করছে।
এ ব্যপারে ভুক্তভোগী সাইদুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার ভাই মােঃ জসিম উদ্দিন তার ওয়ারিশকৃত সম্পত্তি কিছু আগন্তক ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করেন। মোঃ জসিম উদ্দিন গত
১৫/০৯/৮২ তারিখে ১১২৫৫ নং খাশ কবলা দলিল মূলে জনৈক আফসার আলী বরাবর ৩৩ শতক সম্পত্তি হস্তান্তর করেন। এবং পরে পুনরায় গত ইং ১৪/০৯/৮৩ তারিখে ১০৭০৯ নং বিক্রয় কবলা
দালিল মূলে ১৮ শতক জমি আনোয়ারা এবং আরো ১৮ শতক জমি কাজল বিবি বরাবর হস্তান্তর করেন।
এরপর উল্লেখিত সম্পত্তি আমি দলিল গ্রহিতাদের নিকট হতে ক্রয় করি। আমার কাছেও বিক্রি করেন ১ বিঘা। সম্প্রতি বিবাদিগনরা জোর করে আমার নিজ নামে কবলাকৃত সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা করছে। আমি বাধা দেওয়ায় আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেন তারা। আমি নানা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। আমি এর সুষ্ঠ বিচার প্রার্থনা করছি।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তারা জানান, বিবাদীগনরা গায়ের জোরে এহেন কর্মকান্ড চালাচ্ছে। মূলত সমুদয় সম্পত্তি তাদের পিতা বিক্রি করে দিয়েছেন। হঠাৎ তাদের এমন অপকর্মের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার দাবী তারা।
এব্যপারে অভিযুক্ত মোঃ গোলাম মোস্তফার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বাবার সম্পত্তিতে আমরা চাষাবাদ করেছি, অন্যের জমি দখল করার কোন প্রশ্নই ওঠেনা। তবে পিতা জসিমউদদীনের সম্পত্তির পরিমান কত এবং কতটুকু বিক্রি করেছেন এমন প্রশ্নে যা জবাব দেন তা অসংগতিপূর্ণ। তবে কয়েকটি দলিলের সঠিকতা যাচাইও করেছেন বলে জানান গোলাম মোস্তফা।
দলিল নং ৯২৩৪,১০৬৬৬,১৬৭০,৬৪৯২,৬৯৫৬,১১২৫৫(বিবাদমান),৯২৫৭,১১০৮৯,১০৭০৯(বিবাদমান) এবং ৪৬৪৮ মোট ১০টি দলিলের সঠিকটা যাচাই করে সত্যতা পেলেও উক্ত সম্পত্তি কেন দখল করার চেষ্টা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবৈধ দলিল তৈরি করে তারা জমি ভোগদখল করছে, উপরোক্ত দলিলের সম্পত্তি ছাড়াও আমার বাবার আরো সম্পত্তি রয়েছে যা তারা দখল করে রেখেছে। ইতিপূর্বে ইউপি চেয়ারম্যান কতৃক প্রকাশিত রায়ে অনেক অসংগতি ছিল বলেও উল্লেখ করে তিনি।
এ ব্যপারে মান্দা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।