সিনিয়র অফিসার দের না জানিয়ে নিজ উদ্যোগে থানা এলাকার বাইরে গিয়ে মাদক অভিযান পরিচালনা করেন এসআই রিয়াদ। কলেজ ছাত্রকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার এসআই রিয়াদকে ক্লোজ করে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে যুক্ত করা হয়েছে। আর এদনি বিকেলে আদালতে জামিন আবেদনের মাধ্যমে কারাগার থেকে মুক্তি মিলেছে আব্দুল্লাহ বিন লাদেনের।লাদেনকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার ঘটনায় অবশেষে শাস্তি স্বরূপ বরিশালের কাউনিয়া থানার এসআই রেদোয়ান হোসেন রিয়াদকে পুলিশ লাইনের ক্লোজ করা হয়েছে। আর এ ঘটনায় জামিনে মুক্তি মিলেছে নগরীর আলেকান্দা সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র আব্দুল্লাহ বিন লাদেন এর।
এসআই রিয়াদকে ক্লোজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম। অন্যদিকে লাদেনের জামিনের বিষয়টি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেন তার বাবা মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের চরফেনুয়া এলাকার বাসিন্দা কৃষক মোসলেম জমাদ্দার।শুধু ক্লোজ করাই নয়, তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধে সুষ্ঠু বিচার ও এসআই রিয়াদ ও তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মোসলেম জোমাদ্দার। পাশাপাশি তিনি পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো মিথ্যে মামলা থেকে তার ছেলের মুক্তি দাবি জানিয়েছেন।
কৃষক মোসলেম জমাদ্দার জানান, বৃহষ্পতিবার দুপুরে তিনি তার ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তিনি ২১ নভেম্বর ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনা কমিশনারকে খুলে বলেন এবং ন্যায়বিচার দাবি করেন। পরে তিনি এসআই রিয়াদ ও তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পুলিশ কমিশনারের হাতে তুলে দেন।তিনি বলেন, ‘পুলিশ কমিশনার স্যারের কথায় আমি আশ্বস্ত। তিনি কথা দিয়েছেন- আমার ও আমার ছেলের সঙ্গে ঘটা অন্যায়ের ন্যায়বিচার পাব।
এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পুরো ঘটনাটি এরমধ্যেই উপ-পুলিশ কমিশনার কে (উত্তর) খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তিনি বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন।‘প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ওই উপ-পরিদর্শক (এসআই) যে নিজ থানা এলাকার বাহিরে গিয়েছিলেন, সে বিষয়টি উঠে এসেছে। তাই তাকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উল্লেখ্য, জমিজমা নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে চলা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গত ২১ নভেম্বর সকাল উপবন নামক লঞ্চযোগে শ্রীপুর থেকে বরিশালের লঞ্চঘাটে আসেন মোসলেম ও তার ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে লাদেন। কোতোয়ালি মডেল থানাধীন লঞ্চঘাটের গেট থেকে বের হওয়ার সময় ডিবি পরিচয় দিয়ে এসআই রেদওয়ান হোসেন রিয়াদ ও তার সঙ্গে থাকা অপর এক লোক বাবা-ছেলেকে তল্লাশি করে। কথিত মাদক উদ্ধারের নামে তাদের সঙ্গে নিয়ে দিনভর নগরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ১ লাখ টাকা দাবি করেন এসআই রিয়াদ। টাকা আদায়ে প্রথমে বিকাশ নম্বর ও পরে বাবাকে ছেড়ে দিয়ে ছেলেকে কাউনিয়া থানায় আটকে রাখেন তিনি। পরে স্বজনদের মাধ্যমে ঘটনাটি গণমাধ্যমকর্মী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানতে পারেন।
নিজের ঝুঁকির কথা বুঝতে পেরে কথিত তিন পিস ইয়াবা উদ্ধারের রহস্যময় কাহিনী জুড়ে দিয়ে কাউনিয়া থানায় আটক থাকা আব্দুল্লাহকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করেন এসআই রিয়াদ। পরে নিজে বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও ঠুকে দেন তিনি। এ ঘটনায় প্রমাণ মেলে, কাউনিয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও এসআই রিয়াদ কোতোয়ালি থানার সহযোগিতা ছাড়াই লাদেনকে আটক করেন।
উপরোক্ত ঘটনার বিষয় কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান জানান ঘটনাটি দুঃখজনক এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে জড়িতদের বিষয় আইননানক ব্যবস্থা নেয়া হবে ।ইতিমধ্যেই এসআই রিয়াদকে লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে শাস্তি স্বরুপ।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ