পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাজকে ঘিরে আবারও সক্রিয় বালিশ চক্রের হোতারা, রূপপুরের গ্রীণ সিটির বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম মেরামতে সর্বনিম্ন দরপত্র দাতাকে কাজ না দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতাকে কাজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকারের গচ্চা পৌনে ১০ লক্ষ টাকা।
পাবনার রূপপুরের বালিশ চক্রের হোতারা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আবাসিক এলাকা গ্রীণ সিটির বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম মেরামতের কাজের সর্বনিম্ন দরপত্র দাতাকে কাজ না দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা বালিশ চক্রের প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাজিন কন্সট্রাকশন লিমিটেডকে প্রদানের অভিযোগ উঠেছে পাবনা গণপুর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। এতে সরকার প্রায় পৌন ১০ লক্ষ টাকা গচ্চা যাবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, নিজেদের স্বার্থ আদায়ে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে রূপপুরের দেশজুড়ে আলোচিত বালিশকান্ডের হোতারা। পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিমার্ণে বরাদ্দকৃত এক হাজার দুই শত কোটি টাকা নয়ছয় করতেই তারা নিজেদের মত করে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে সিরাজগঞ্জ থেকে মো: মোস্তাফিজুর রহমানকে এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে রূপপুর প্রকল্প শুরু হওয়ার সময়কার নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমকে বদলী করে পাবনা আনেন এবং লুটপাটের ‘ছক’ আটেন। তারই ধারাবাহিকতায় আবারও লুটপাট শুরু করা হচ্ছে বলে সব মহলে অভিযোগ উঠেছে।
দুদকসহ বিভিন্ন দফতরে প্রেরিত এক লিখিত অভিযোগে জানা যায়, পাবনার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আবাসিক এলাকা গ্রীণ সিটির বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম মেরামতের কাজের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। সেই দরপত্রে মের্সাস ভুইয়া কনষ্ট্রাকশন এবন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ৯৭ লক্ষ ২৬ হাজার ৭২০ টাকা দশমিক ৩‘শ পয়সা দর দিয়ে সর্বনিম্ন দরপত্রদাতা নির্বাচিত হন। আর বালিশ চক্রের প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাজিন কন্সট্রাকশন লি. সর্বোচ্চ দর দেন ১ কোটি ৬ লক্ষ ৯১ হাজার ৪০১ টাকা দশমিক ৯৬৪ পয়সা। নির্বাহী প্রকৌশলী অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সাজিন কন্সট্রাকশনকে কার্যাদেশ দেন। এতে দেখার উপরে সরকারের ৯ লক্ষ ৬৪ হাজার ৬৮১ টাকা দশমিক ৯৬৪ পয়সা অহেতুক গচ্চা যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
অভিযোগে প্রকাশ নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে আনোয়ারুল আজিম যোগদানের পর থেকেই আবার এই সব অনিয়ম শুরু হয়েছে। তারা একের পর এক সাজিন কনষ্ট্রাকশন কাজ দিতে নিজেরাই বেশী উদ্যোগী হয়ে উঠছেন।
এ ব্যাপারে সাজিন কানষ্ট্রাকশনের স্বত্ত্বাধিকারী মো. শাহাদত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে গণপুর্ত বিভাগ পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সর্বোচ্চ দরদাতাকে কাজ দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সাজিন কন্ট্রাকশনের কাজের ভলিউম ও অভিজ্ঞতা বেশী তাই বেশী তাই তারাই কাজ পেয়েছে। এ বিষয়ে আমি কাউকে কাজ দিতে পারিনা। ঢাকা থেকে দরপত্র কমিটি যার দারা কাজ করা সম্ভব মনে হয়েছে তাকেই কাজটি দিয়েছে। এখানে অনিয়ম বা দুর্নীতির মত কোন ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে গণপুর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যারা সর্বনিম্ন দরদাতা ছিল তাদের কাগজপত্রে অনেক ক্রটি ছিল। তাই তাদের কাজ দেওয়া হয়নি।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পাবনা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক খায়রুল হক অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগকারীর ঠিকানা ও মোবাইল না থাকায় দরখাস্তটি অসম্পুর্ন। তবে কোন কারণ ছাড়াই সরকারের পৌনে ১০ লক্ষ টাকা গচ্চা যাওয়ার বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখা হবে বলে জানান।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ