ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে রহিমা এন্টার প্রাইজ নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। কাজ শেষ হওয়ার দু’একদিন পরেই হাতের আলতো ছোঁয়ায় সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়া জানা যায়, উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদী কলেজে পাশে ইসলামপুর ও ধরণীধরদী গ্রামের সদ্য নির্মিত ৫০০ মিটার কার্পেটিং রাস্তা নির্মানের কিছু দিন পরে কার্পেটিং উঠে গিয়েছে।
সড়কটি কাদিরদী কলেজ গেট ও মাঝকান্দী ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে ভাটদীবাজারের সংযোগ সড়ক এটি।
স্থানীয় লোকজন বলেন, নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ হওয়ার কারণে নির্মাণের কিছুদিন পরে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। সড়কটি দিয়ে এখনো কোন ধরণের ভারী যান চলাচল করেনি। এখনই রাস্তার এ অবস্থা। তাহলে আরো কিছু দিন পরের চিত্র কি হবে? কার্পেটিংয়ের নিচে নিন্মমানের বিটুমিন দিয়ে পোড়া মাটি ও ধূলা বালুর উপরে কাজ সেরে চলে গিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। আসলে দেশটা নষ্ট সমাজের হাতে জিম্মি হয়ে রয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অঢেল টাকার মালিক। তারা নিন্মমানের কাজ করে প্রকৌশলী সহ নানান জায়গা বিশেষ সুবিধা দিয়ে তাদের কাজের বৈধতা সার্টিফিকেট নিয়ে সরকারি টাকা বিনষ্ট করছে।
সরকার দেশের উন্নয়ন মূলক কাজ করছে। আর কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা কিছু সরকারি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সরকারের বদনাম করছে। তাই দ্রুত এসব ব্যবসায়ী ও দুর্নীতি গ্রস্থ সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারিদের দমন করা না গেলে দেশটা রসা তলে চলে যাবে।
আইআরডিবি প্রকল্পের আওতায় ড্রেস কার্পেটিং এ সড়কটির ৫০০ মিটারের ব্যয় মূল্য ধরা হয়েছে ৪২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। সড়কে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রাইমকোড হালকা ভাবে দিয়ে কোন রকমে ঘঁষা মাঝা করে কার্পেটিং বিছিয়ে গিয়েছে। ফলে হালকা বৃষ্টি হওয়ার পরে রাস্তার বিভিন্ন স্থান থেকে কার্পেটিং উঠে গিয়েছে।
রাজবাড়ী জেলার রহিমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী লিমন হাকিমের মোবাইল নম্বারে কল করলে তিনি সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে, পরে কথা বলবে বলে ফোন কেটে দেন। তার নম্বারে একাধিক বার কল করলেও তিনি রিসিভড করেননি।
ঠিকাদার নিন্মমানের কাজ করেছে বিধায় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার জন্য কথিত এক সাংবাদিকের মোবাইল নাম্বারে বিকাশের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিলে। ওই কথিত সাংবাদিক তাৎক্ষনিক সে টাকা ঠিকাদারের নাম্বারে আবার ফেরত পাঠিয়ে দেন।
সহকারি প্রকৌশলী নাজনীন (এসও) বলেন, স্থানীয় লোকজন কার্পেটিং তুলে দিতে পারে, না হলে এভাবে নষ্ট হবে কেন। নিয়ম অনুযায়ী কাজ করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। আর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ১০ পার্সেন্ট জামানত সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা রয়েছে। ১ বছরের ভেতরে রাস্তা নষ্ট হয়ে গেলে আবার ঠিক করে দিবেন।
তবে আপনাদের বলি স্থানীয় ঠিকাদার হলে আমরা কিছুটা ছাড় দেয়। তবে তারা বাইরের ঠিকাদার। এজন্য তাদের কাজে ফাঁকি দেয়ার সুযোগ কম।
উপজেলা প্রকৌশলী পূর্ণেন্দু সাহা বলেন, কাজের মান ঠিক আছে। তবে কার্পেটিং উঠার কারণ হিসেবে তিনিও বলেন, শুনেছি স্থানীয় লোকজন টেনে টেনে কার্পেটিং উঠিয়ে ফেলেছে।
যারা সড়কের কার্পেটিং টেনে উঠিয়ে ফেলেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রাহণ করা হবে। সড়কের যেখান থেকে কার্পেটিং উঠে গিয়েছে। রোববার (১০ ডিসেম্বর) সেখানে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ঠিক করে দিয়েছেন।