বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী পঙ্কজ নাথের অনুসারীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন তার সমর্থকরা।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে হিজলা উপজেলা সদরের টেকের বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়।
যা উপজেলা পরিষদ হয়ে সদর স্ট্যান্ড সংলগ্ন ‘বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল’ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হিজলা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলায়মান শান্ত জানান, ২৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় যোগ দিতে হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে একত্রে স্থানীয় জনগণ বরিশাল যান।
সমাবেশস্থলে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ড. শাম্মী আহমেদের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। যে ঘটনায় বহু লোক আহত এবং একজনের মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, ওই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শনিবার সকালে হিজলায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেন।
সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বড়জালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন হাওলাদার, হিজলা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম, বাংলাদেশ প্রজন্ম অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম স্বপন চৌধুরী ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম স্বপন চৌধুরীসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বক্তারা, ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রশাসনকে ঘটনার সঠিক তদন্ত করে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য-বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মাঠে পঙ্কজ নাথ ও ডা. শাম্মী আহমেদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভার মাঠে দুপক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী জনসভায় শাম্মী গ্রুপ-ই প্রথমে মারামারি শুরু করেছেন, পঙ্গকজ গ্রুপের অর্ধশতাধিক নেতা কর্মীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করছেন, এবং একজনের মৃত হয়েছে।
মৃত সিরাজ সিকদার (৫৮) বরিশালের হিজলা উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামের কোব্বাত সিকদারের ছেলে। পঙ্কজ ও শাম্মী অনুসারীরা নিহত সিরাজকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করছেন।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভুট্টো মোল্লা বলেন, ‘মিছিল নিয়ে জনসভাস্থলে ঢুকতে ছিলাম। আগে থেকে অবস্থান নেয়া শাম্মী অনুসারীরা বোতল ইট পাথর নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তখন তারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সিরাজসহ ১৫ জনকে আহত করেন। এর মধ্যে সিরাজ মারা যান।’
শাম্মীর অনুসারী হিজলা উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘আমরা আগে থেকে জনসভাস্থলে ছিলাম। পঙ্কজ নাথের অনুসারীরা প্রবেশ করে মারামারি শুরু করেন। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। তখন মারামারির মধ্যে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন সিরাজ। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি বলেন, সিরাজ জনসভার মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে আনার পর দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কবিরউদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তবু সন্দেহের কারণে আমরা মরদেহ মর্গে পাঠিয়েছি। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ