চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপ-নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের এমপি নোমান আল মাহমুদকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল।
মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার পর দলীয় সিদ্ধান্ত অনুসারে নোমান আল মাহমুদকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সোলায়মান আলম শেঠকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে ছেড়ে দেওয়া হয় আসনটি।
তবে আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেটলি প্রতীকে নির্বাচন করছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুছ ছালাম এবং ফুলকপি প্রতীকে নির্বাচন করছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সাবেক কাউন্সিল বিজয় কুমার চৌধুরী।
এই দুই শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থীকে কেন্দ্র করে বোয়ালখালী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা দুই ভাগ হয়ে কেটলি ও ফুলকপি প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নামার কারণে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে শেষ পর্যন্ত কী হয়, সেটি দেখার একধরনের কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
কেটলি–ফুলকপির ভাগাভাগিতে লাঙ্গলের ভোটে জেতা নিয়েও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা করতে দেখা যায় লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে সোলাইমান আলম শেঠকে। তবে বোয়ালখালীতে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মতো সাংগঠনিকভাবে শক্ত অবস্থানে নেই জাতীয় পার্টি।
ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভিড়ে জাতীয় পার্টি ভোট লড়াইয়ে শেষমেষ জয়ী হতে পারবেন কিনা এটাই এখন বোয়ালখালীর জনসাধারণের মাঝে আলোচনা চলছে। অন্যদিকে বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, বোয়ালখালী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিউল আলম ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকারিয়াসহ তাদের নেতা-কর্মীরা কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালামের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা করতে দেখা যায়।
অপরদিকে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরীর ফুলকপি প্রতীকের পক্ষে বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র ও দক্ষিণ জেলার যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জহুর, বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজাসহ তাদের নেতা-কর্মীরা বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা করেছেন।
বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম–৮ আসনে আমাদের দলীয় নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রার্থী নেই। সেহেতু জেলা ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে যার যে প্রার্থীকে ভালো লাগে, তারা তার পক্ষে কাজ করতে কোন বাধা নেই। তবে নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগেও যদি দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত আসে তা মাথা পেতে নিব।
এখনো পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। ভোটের মাঠে কোনো প্রার্থীকে বাধা প্রদান করা যাবে না। প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। সবাইকে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচনী প্রচারণা করতে হবে। আমি কেটলি প্রতীকে আবদুচ ছালামের পক্ষে প্রচার প্রচারণা করছি। অন্য কেউ যাকে পছন্দ হয় তার পক্ষে কাজ করবে। তাতে দলীয় কোনো বাধা নেই।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুর বলেন, অসামপ্রদায়িক রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি। কে কাকে ভোট দিবে সেটা বলা যাচ্ছে না। আমি বিজয় কুমার চৌধুরীর পক্ষে কাজ করছি সেটা সবাই জানে। বিজয় কুমার চৌধুরী আমাদের বোয়ালখালী সন্তান বিধায় তার পক্ষে আমরা কাজ করছি।
কেটলি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী থাকুক আর না থাকুক জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সাধারণ ভোটাররা যেন ভোট কেন্দ্রে যায়, সে পরিবেশ সৃষ্টি করতে। সে হিসেবে প্রার্থী হয়েছি।
মাঠে নৌকা না থাকায় সাধারণ জনগণ ও রাজনীতিবিদরা যাকে খুশি ভোট দিতে পারে। যে উন্নয়ন করবে জনগণ তাকেই ভোট দিবে। আমি নগরে ৪১টি ওয়ার্ড সাজিয়েছি। বোয়ালখালী উন্নয়ন করা কোনো বিষয় নয়। আমি নির্বাচিত হলে বোয়ালখালী একদিন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন হবে।
সুতরাং বোয়ালখালীবাসী আমাকে নির্বাচিত করবে বলে আমার বিশ্বাস রয়েছে। ফুলকপি প্রতীকে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য বিজয় কুমার চৌধুরী বলেন, আমি বোয়ালখালীর সন্তান। সুতরাং বোয়ালখালীর জনসাধারণ বোয়ালখালীর ছেলে হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করবে।