দীর্ঘ আট মাস সংস্কার কাজের প্রয়োজনে ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সংস্কারের প্রথম ধাপ শেষ করে ট্রেন চলাচল শুরু হলে ও যানবাহন চলাচলে সময় লাগবে আরো দুই মাস। বিশেষ প্রযুক্তির ঢালাই ও পিচ বা কার্পেটিং করে ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। সব মিলিয়ে মার্চে যানবাহন চলাচলের প্রস্তুতি রয়েছে রেলওয়ের।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচলের পথ থাকায় রেল ট্র্যাকের অভ্যন্তরে পানি জমে পাত ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এ কারণে বছরের বিভিন্ন সময় রেল ট্র্যাক মেরামতের প্রয়োজনে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য বন্ধ রাখা হতো। তবে এবার বিদ্যমান পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ রাখা হবে।
এরপর ওই কংক্রিট ঢালাইয়ের ওপর পিচ দিয়ে সড়কপথ নির্মাণ করা হবে। এতে সড়ক ও রেলপথ উভয়ই আগের চেয়ে শক্ত থাকবে। বর্ষা মৌসুম কিংবা কুয়াশাজনিত পানি না জমে কংক্রিট ঢালাইয়ের অভ্যন্তরীণ ড্রেনেজ সিস্টেম দিয়ে নদীতে পড়লে রেল ট্র্যাক, ক্লিপ ও সেতুর ইস্পাতের পাটাতন ক্ষয় হবে না। বিশেষ প্রযুক্তি ও বুয়েটের পরামর্শে নতুন করে নির্মাণ করায় মেয়াদোত্তীর্ণ সেতুটি দীর্ঘ সময় ব্যবহারযোগ্য থাকবে বলে মনে করছেন রেলওয়ের প্রকৌশলীরা।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর ১৯৩০ সালে নির্মিত কালুরঘাট রেল সেতুর বয়স প্রায় ৯৫ বছর। এ সেতু দিয়ে ১৯৫৮ সাল থেকেই রেলের পাশাপাশি যানবাহনও চলাচল করে। কিন্তু দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণের পর এ সেতুর বিকল্প হিসেবে নতুন সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। উচ্চতা নিয়ে জটিলতায় নতুন সেতু নির্মাণকাজ বিলম্বিত হওয়ায় রেলওয়ে বিদ্যমান সেতুটি সংস্কারের মাধ্যমে সংকট নিরসনের চেষ্টা করছে।
এরই মধ্যে ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বুয়েটের পরামর্শে সেতুটি সংস্কার করা হচ্ছে। জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা বলেন নতুন সেতু নির্মাণের আগে কালুরঘাট পুরনো সেতুই রেলওয়ে সহ বোয়ালখালীর মানুষের অন্যতম ভরসা। কক্সবাজার পর্যন্ত একাধিক নতুন ও আন্তঃনগর ট্রেন চলাচলের প্রয়োজনে সেতুটি দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারযোগ্য করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।
রেল ট্র্যাকের কাজ ও সংস্কার সফলভাবে সম্পন্ন হলেও যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে বুয়েট একটি বিশেষায়িত নকশা প্রণয়ন করেছে। বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে সড়ক নির্মাণ করে রেলপথ সুরক্ষার পাশাপাশি চলাচলরত যানবাহনের সুরক্ষা দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। কয়েক মাসের মধ্যে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর এ সেতু দিয়ে সড়ক যান চলাচল সম্ভব হবে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ