নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ছোট গ্রাম চাকলা। এ গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম এবার চার বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছেন। আর কয়েক দিন পরই তাঁর খেত থেকে ঝুড়ি ভর্তি করে আলু তোলা শুরু হবে।
তবে গত কয়েক দিনের টানা শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে তাঁর খেতের হৃষ্টপুষ্ট আলুগাছগুলো নষ্ট হয়ে যেতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় লাভের আশায় দিন গুনতে থাকা সিরাজুলের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ।
গত সোমবার দুপুরে নওগাঁ সদর উপজেলার পাহাড়পুর মাঠে কথা হয় চাকলা গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আলুর দাম বেশি দেখে চার বিঘা জমিতে আলু আবাদ করেছি। আলুর গাছগুলোও হৃষ্টপুষ্ট হইছিল।
আর ২০-২২ দিন পরই খেতের আলু তোলার জন্য পরিপক্ব হয়ে যাবে। কিন্তু হঠাৎ করে আলুর খেতে মড়ক দেখা দিয়েছে। দুই-একটা করে গাছ উপড়ে দেখছি আলু পচে গেছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে খেতে কীটনাশক ছিটাচ্ছি। অন্যান্য পরিচর্যারও কমতি নেই।’
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে নওগাঁ ও জয়পুরহাটের বিভিন্ন অঞ্চলে আলুখেতে ছত্রাকজনিত লেটব্লাইট (নাবিধসা) রোগ দেখা দিয়েছে। লেটব্লাইট রোগে প্রথমে আলুগাছের পাতা ঝলসে যায়, পরে পুরো গাছ মরে যায়। একই কারণে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আলুর লেটব্লাইট রোগ ঠেকাতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে খেতে ছত্রাকনাশক ছিটাচ্ছেন কৃষক। এতে আলুর উৎপাদন খরচ বাড়ছে। এদিকে বীজতলা বাঁচাতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা ও সন্ধ্যায় বীজতলায় পানিসেচ দিয়ে সকালে সেই পানি বের করে দিচ্ছেন চাষিরা।
চলতি বছর নওগাঁয় ২০ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ২৪ হাজার ৭১৫ মেট্রিক টন।
নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর, কীর্তিপুর ও তিলকপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ আলুর খেতে রোগ দেখা দিয়েছে। অনেক খেতে আলুগাছের পাতা ঝলসে গেছে। আবার কিছু খেতের আলুগাছ মরে গেছে। কৃষকেরা আলুখেতে ছত্রাকনাশক ছিটাচ্ছেন।