চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রুবেল দে (৩৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী পুরবী পালিত। আজ মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড.বেগম জেবুননেছার আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলাটির আবেদন করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ বলেন, বাদীপক্ষ আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আবেদন জমা দিয়েছেন।
আদালত সেটি আগে যাচাই-বাছাই করে তারপর শুনানি করা হবে কিনা দেখবেন। মামলায় যাদেরকে বিবাদী করতে আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন, বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আছহাব উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) (ওসি)মো. সাইফুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক (এসআই) এস. এম আবু মুসা, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাঈন উদ্দিন, এএসআই মো. সাইফুল ইসলাম, কনস্টেবল কামাল ও আসাদুল্লাহ, এসআই রিজাউল জব্বার, ঘটনার দিনের থানার ডিউটি অফিসার, চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন, জেলার মোহাম্মদ এমরান হোসেন মিয়া, ডেপুটি জেলার নওশাদ মিয়া, মো. আখেরুল ইসলাম, সুমাইয়া খাতুন ও ইব্রাহিম এবং কারাগারের পদ্মা ১৫ নম্বর ওয়ার্ড মাস্টার।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২৭ জানুয়ারি বিকেলে বোয়ালখালী থানা পুলিশের একটি টিম রুবেল দে, কে গ্রেপ্তার করে। ওইদিন রাতে বোয়ালখালী থানা থেকে রুবেলের পরিবারে ফোন দিয়ে ২ লাখ টাকা দাবি করা হয় এবং টাকা না দিলে রুবেল কে ৫০০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধারের মামলা সাজিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। কথামতো টাকা দিয়ে অস্বীকৃতি জানানোয় ২৭ জানুয়ারি রুবেলকে ২০০ লিটার মদ উদ্ধার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আদালত রুবেলকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
পরবর্তীতে ২ ফেব্রুয়ারি রুবেলকে তার স্বজনরা কারাগারে দেখতে যান। সেদিন তাকে হুইল চেয়ারে করে স্বজনদের সামনে আনা হয় এবং ওইদিন স্বজনরা রুবেলের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। এর কারণ জানতে স্বজনদের তাড়িয়ে দিয়ে কারারক্ষীরা রুবেলকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ৪ ফেব্রুয়ারি আইনজীবীরা রুবেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতে আবেদন করেন। এরই মধ্যে ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে কারাগার থেকে খবর আসে রুবেল মারা গেছেন এবং তার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অজয় ধর বলেন, আদালত মামলার আবেদন গ্রহণ করেছেন। এটি যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীতে গ্রহণযোগ্যতা শুনানির তারিখ দেবেন বলে আদালত মৌখিকভাবে বলেছেন।