একসময় যে ঘোড়ামারা নদী মাছে ভরপুর ছিল, এখন সেখানে অন্য রকম দৃশ্য। পানি নেই, আছে কেবলই বালুচর। আর সেই বালুচরে চাষ হচ্ছে মাছের বদলে ধান।
লালমনিরহাট জেলা পাটগ্রাম উপজেলার ধরলা নদীতে জেগে উঠা ফুটন্ত বালুচর এখন কৃষকের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে ধরলা নদীর বিস্তৃর্ণ তীরে বোরো ধান বাম্পার ফলন দেখা যাচ্ছে । চলতি মৌসুমে ধরলা নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে বিভিন্ন ফসলের চাষ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
এখানকার চরের বালিতে জমা পলি মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষের উপযোগী বিভিন্ন ফসল সহ বোরো ধান হচ্ছে বেশ ভালো। কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এই মৌসুমে ফসলের চাষ করে লাভবান হবেন এখানকার স্থানীয় চাষিরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ধরলা নদীতে বিভিন্ন স্থানে জেগে উঠেছে চর। এই মৌসুমে নদীর তীরে জেগে ওঠা এসব চরে ফসলের চাষ করেছেন এই অঞ্চলের স্থানীয় চাষিরা। আবহাওয়া চাষের অনুকূলে থাকায় এ বছর ফসলের চাষে বেশ সাফল্যের আশা স্থানীয় কৃষকদের।
এই সাফল্য বজায় থাকলে আগামী বছর আরও বেশি জমিতে বিভিন্ন ফসলের চাষ করবেন চাষিরা ।ধরলার তীরে যেদিকে দুচোখ যায় শুধু সবুজ ক্ষেত চোখে পড়ে। ফসলের চাষে তুলনামূলকভাবে খরচ কম লাগায় ও পরিশ্রম কম হওয়ায় দিন দিন ধরলা নদীর তীরে চাষিরা বোরো ধান সহ সবজি ও বিভিন্ন ফসলের চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
উপজেলার বুড়িমারী, শ্রীরামপুর ও পাটগ্রাম ইউনিয়ন,
পৌর ,জোংড়া ইউনিয়নের স্থানীয় চাষিরা জানান, আগে এখানকার বালুচরে তেমন কোন ফসল বা বোরো ধান চাষ করা হতো না। এই মৌসুমে চরে পলিমাটি পড়ায় ও এখানকার আবহাওয়া ধান, ভুট্টা, সরিষা,সবজি সহ বিভিন্ন ফসল চাষের অনুকূলে থাকায় দিন দিন এখানে চাষাবাদ বেড়েই চলেছে। তাছাড়াও ধরলা নদীর তীরে জেগে ওঠা বালুচরে চাষ করলে তেমন কোন খরচ হয় না এবং তুলনামূলকভাবে পরিশ্রম অনেক কম লাগে। বালুচরে চাষ করা সবজিতে তেমন কোন সার কিংবা রোগের জন্য কীটনাশকের ব্যবহার করতে হয় না। এজন্য সার কিংবা কীটনাশকের জন্য আলাদাভাবে কোন খরচ হয় না।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল গাফফার বলেন, আগের বছরগুলোর তুলনায় এই বছর বালুচরের জমিগুলোতে ব্যাপকহারে ধান,ভুট্টা,সরিষা সহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছেন কৃষকেরা। বালুচরের পলিমাটিতে ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হওয়ার আশা করছেন চাষিরা। আমরা ফসল চাষের ব্যাপারে কৃষকদের সকল ধরণের সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে কৃষকদের মধ্যে মোঃ জালাল হোসেন জানান ,আমরা সরকারের সহযোগিতা পেলে ধরলা নদীর বালুর স্তুপ সরিয়ে চাষাবাদের উপযোগী করে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যেতে পারবো,খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য সংকটের ঘাটতি পুরন করে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব। ভুট্টা ও ধান চাষ করে এখন অনেক চাষি স্বাবলম্বী হয়েছে,কৃষক সিমুল জানান,ধরলা নদীতে চাষাবাদ করে এখন আমার পরিবার খুব ভালো আছে। এবং এই বছরে অনেক জমিতে চাষ করেছি আশা করা যায় ভালো ফসল পাব।