দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামে মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে আগামীকাল বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদ উদযাপিত হবে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফ ও চন্দনাইশের জাঁহাগিরিয়া শাহ ছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারীরা এদিন ঈদ উদযাপন করবেন। এরইমধ্যে ঈদের জামাত আদায়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ। দরবার শরীফের অনুসারীরা বিশ্বের কোথাও চাঁদ দেখা সাপেক্ষে প্রতি বছরের মতো এবার ও একদিন আগে ৩০ রোজা পূর্ণ করে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন।জানা যায়, সুফি সাধক সৈয়্যদ মাওলানা মোখলেসুর রহমান জাঁহাগিরি (র.) ২০০ বছরের অধিক সময় থেকে বিশ্বের কোথাও চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রোজা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহার নামাজসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করার নিয়ম প্রবর্তন করেন।
সেই থেকে এ নিয়ম মেনে আসছেন তার ভক্ত ও অনুসারীরা। এবার ৩০ রোজা পূর্ণ করে ১০ এপ্রিল (বুধবার) ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুতি শেষ করেছে দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ। সাতকানিয়ার মির্জারখীল দরবার শরীফের সৈয়্যদ মাওলানা আবদুর রহমান শাহ জাহাঁগিরী ও চন্দনাইশ কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের শাহজাদা মাওলানা মো. মতি মিয়া মনসুর জানান, হানাফী মাযহাবের অনুসারী হিসেবে বিশ্বের কোথাও চাঁদ দেখা সাপেক্ষে সুফি সাধক সৈয়্যদ মাওলানা মোখলেসুর রহমান জাঁহাগিরীর দেখানো পথ অনুসরণ করে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করা হয়। চন্দনাইশ জাঁহাগিরীয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রদর্শিত এ পথ অনুসরণ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভার বুলার তালুক,
হরিনার পাড়া, ফকির পাড়া, সর্বল কাজী বাড়ি, চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, কানাইমাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, বরমা, ধোপাছড়ি, দোহাজারি, জামিজুরি, মোহাম্মদপুর, পশ্চিম এলাহাবাদ, উত্তর কাঞ্চননগর, জুনিঘোনা, আব্বাসপাড়া, মাঝের পাড়া, দিঘির পাড়া, পন্ডিত বাড়ি, মোস্তা আলী শাহ, কেন্দুয়াপাড়া, কেশুয়া, মোহাম্মদপুর, উত্তর হাশিমপুর, ছৈয়দাবাদ, খুনিয়ারপাড়া, পটিয়ার শ্রীমাই, হাইদগাঁও, ফকির পাড়া, বাথুয়া, সাতকানিয়ার রুপকানিয়া, বাঁশখালীর জলদী, গুনাগরি, কালীপুর, গন্ডামারা, মিরিঞ্জিরতলা, ছনুয়া, সাধনপুর, আনোয়ারার তৈলারদ্বীপ, বারখাইন, চরণদ্বীপ, খরণদ্বীপ, লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া,
চুনতি, পুটিবিলা, উত্তর সুখছড়ি, বাংলাবাজার, মইশামুড়া, খোয়াছপাড়া, বাজালিয়া, কাঞ্চনা, গাটিয়াডাঙ্গা, পুরানগড়, মনেয়াবাদসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের লক্ষাধিক অনুসারী ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন বুধবার।এ ছাড়া বোয়ালখালী, হাটাহাজারী, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, আনোয়ারা, বাঁশখালী, পটিয়া, কর্ণফুলী, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজার, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, হাতিয়া, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ফেনী, মীরসরাই, লক্ষীপুর, সীতাকুণ্ড, কুমিল্লা, সিলেট, মৌলভীবাজার, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, নলসিটি, খুলনা,
নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যেখানে মির্জাখীল ও জাহাঁগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারী রয়েছেন, তারাও ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন।
কাল বুধবার (১০ এপ্রিল) জাহাঁগিরীয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের সৈয়্যদ মাওলানা মোহাম্মদ আলীর ইমামতিতে ১ম জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় ও দরবারের শাহজাদা মাওলানা মো. মনজুর আলীর ইমামতিতে ২য় জামাত সকাল ৯টায় ইদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মির্জাখীল দরবার শরীফের সৈয়্যদ মাওলানা আবদুল হামিদ শাহ’র জাহাঁগিরী (নুরুল আরেফিন) ইমামতিতে মির্জাখীল দরবার শরীফে সকাল ১০টায় ও সৈয়দ ড. মাওলানা মাকসুদুর রহমানের ইমামতিতে সকাল সাড়ে ৯টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে।