গোপালগঞ্জে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও কর্মীদের দায়িত্ব পালন নিয়ে রোগীদের হাজারো অভিযোগ। অভিযোগের সত্যতা জানতে স্বয়ং গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম রাতে হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন কালে নিজেই হতাশ হয়ে চিকিৎসকদের কাছে এর প্রতিকার জানতে মুঠোফোনে কথা বলেন। সোমবার ( ২৯ এপ্রিল) রাতে গোপালগঞ্জ আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শণ করেন তিনি।
সোমবার দিবাগত রাতে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা পরিদর্শনে গিয়ে দুর্বৃত্তদের হাতে আহত সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ আহসান হাবিব ও চন্দ্রদিঘলিয়া ইউনিয়নের মহল্লাদার তাজুল মোল্লার সাথে কথা বলেন।
তাদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং প্রত্যেককে চিকিৎসা খরচ বাবদ পনের হাজার করে টাকা অনুদান দেন জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম। এর পর তিনি অন্যসব রোগী ও স্বজনদের সাথে চিকিৎসা সেবা নিয়ে কথা বলেন। এই পরিদর্শনের বিষয়ে তিনি আগে থেকে কিছইু জানাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
তিনি দেখতে চেয়েছিলেন হাসপাতালের আসল চিত্রটা কি। সরকারি কর্মীরা দায়িত্ব পালন করেন কি না, রোগীরা সঠিক সেবা পান কি না। রোগী বা স্বজনদের অভিযোগগুলো সত্য কিনা। তবে এসময় জরুরী বিভাগের ডাক্তার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন।
জেলা প্রশাসক যা দেখেছেন সেটি এমন। জরুরি বিভাগে রোগী আসার পর কিভাবে চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকেন। জরুরী বিভাগ, টয়লেট অপরিস্কার, রোগীদের শয্যা ও আশপাশ এলাকা নোংরা। দুর্গন্ধ পরিবেশে রোগী ও স্বজনরা অবস্থান করছে । প্রয়োজনের তুলনায় নার্স ও ডাক্তার স্বল্পতা।
যথার্থ চিকিৎসা সেবা না পাওয়া সংক্রান্ত বেশ অভিযোগ । এই চিত্র দেখে হতাশ হন জেলা প্রশাসক । এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ আজহারুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহসীন উদ্দিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজ বাবলী শবনম, সহকারী কমিশনার মোঃ সেবগাতুল্যাহ উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতালের পরিবেশ ও চিকিৎসা সেবা পর্যবেক্ষণ করে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন,গোপালগঞ্জে আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ও শিশু ওয়ার্ড ঘুরেছি। পরিবেশটা নোংরা মনে হয়েছে। আর শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ মোটামুটি ভালো।
তবে রোগী বা স্বজনদের কাছ থেকে চিকিৎসাসেবায় নার্স ও ডাক্তারদের অবহেলার কিছু অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ যাচাই বাছাই করতে ডাক্তার, নার্স বা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাতে লোকবল সংকট একটা বড় সমস্যা বলে মনে হয়েছে। দেশের মেধাবীরাই ডাক্তার হন।
আর তাদের কাছ থেকে জনগণ সেবা পাবে এটাই সবার কাম্য। আশা করবো আগামীতে সবাই সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে রোগীদের যথার্থ সেবা দিবেন। এবং লোকবল সংকট মিটাতে আগামীতে সভা করে সিধান্ত গ্রহন করা হবে।