চট্টগ্রামে চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের এক অধ্যাপকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। আজ ১৬ ই মে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর রনজিত কুমার দত্তের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় কলেজের আরেক কর্মচারী গুরুতর আহত হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. আবদুল খালেক জানান, বৃহস্পতিবার সকালে কলেজের সেমিনার কক্ষে অনার্স ১ম বর্ষের রেজিষ্ট্রেশন কার্ড ও অনার্স ৪র্থ বর্ষের এডমিট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম চলছিল। কলেজের অফিস সহায়ক প্রযুক্তা পাল সেমিনার কক্ষে এ কার্ডগুলো বিতরণ করছিলেন।
এ সময় কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. সাফাতুন নুর চৌধুরী এসে বলেন, নষ্ট ফ্যান ঠিক করার জন্য মিস্ত্রি নিয়ে এসেছি। সে সময় সেমিনার কক্ষে রেজিষ্ট্রেশন ও এডমিট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম চলমান থাকায় ফ্যান ঠিক করার বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ পরে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান প্রযুক্তা পাল। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা সেখান থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পর সেমিনার কক্ষ থেকে আওয়াজ আসায় সেখানে গিয়ে দেখি সাফাতুন নুর চৌধুরী হাতে রড নিয়ে ফ্যান ভেঙছেন।
এ সময় রড গিয়ে পড়ে অফিস সহায়ক প্রযুক্তা পালের মাথায়। এ সময় আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চন্দনাইশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ঘটনার ২০ মিনিট পর সাফাতুন নুর অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে ঢুকেন।
এসময় অধ্যাপক তাকে ঘটনার ব্যাপারে থানায় জানানোর কথা বললে সে ক্ষিপ্ত হয় এবং অধ্যাপক ড. একেএম আতিকুর রহমানের মুখে ঘুষি মারে। এ ঘটনায় অধ্যাপক ড. একেএম আতিকুর রহমান চন্দনাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন।
তিনি আরো বলেন, কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে এবং অধ্যক্ষের সামনে এরকম ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক। এটা আমাদের জন্য অশনি সংকেত। ছাত্রলীগ নেতা সাফাতুন নুর চৌধুরী এ ব্যাপারে বলেন, অনার্স ১ম বর্ষের ভর্তি ফি পটিয়াসহ পাশাপাশি অন্যান্য কলেজ থেকে বেশি নেয়া হচ্ছে বলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে জানায়।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি ঘটনাটি জানার জন্য অধ্যক্ষের রুমে যায় এবং সরকারি প্রঙ্গাপন অনুযায়ী ভর্তি ফি নেয়ার অনুরোধ জানান। তবে কাউকে মারধর করিনি। কলেজ কর্তৃপক্ষ বাড়তি ফি নেয়ার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।
কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক রনজিত কুমার দত্ত বলেন, ঘটনার বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা প্রতিটি বিভাগের প্রভাষক ও অধ্যাপকদের নিয়ে মিটিংয়ের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। চন্দনাইশ থানার ওসি (তদন্ত) যুযুৎসু যশ চাকমা জানান, কলেজের সেমিনার কক্ষের একটি নষ্ট ফ্যান ঠিক করা নিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কলেজের অধ্যাপক ড. একেএম আতিকুর রহমান একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।