চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফুন নাহার বলেছেন, আগামী ৫ জুন বুধবার চতুর্থ ধাপে বাঁশখালী ও লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আদলে ইতোপূর্বে ১ম, ২য় ও ৩য় ধাপে এখানকার ১১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিতব্য উল্লেখিত এ দু’টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অবাধ, গ্রহণযোগ্য, অত্যৗল্প সুষ্ঠুভাবে উপহার দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, থানার অফিসার ইনচার্জগণসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে।
কোন প্রার্থী বা প্রার্থীর সমর্থক আচরণবিধি লংঘন করলে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন-২০২৪ উপলক্ষে (৩০ মে) বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় ও আইন-শৃঙ্খলা বিষয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদেরকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাল ভোট প্রদান, কেন্দ্র দখল বা অন্য কোন অজুহাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে কোন ধরণের গুজব ছড়ালে ছাড় নেই। নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সবর্দা আপনাদের পাশে থাকবে। নির্বাচনে কোন অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা একেএম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবে। একজন প্রার্থীর পোষ্টারের উপর অন্য প্রার্থীর পোষ্টার লাগানো যাবে না। নির্বাচনী আচরণবিধি মানতে হবে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সভায় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মোঃ আরিফ হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান বা পরিপত্র মেনে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ভোট কেন্দ্রে বা বাইরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যা যা করা দরকার তা-ই করবো। কোন অপশক্তির কাছে আমরা মাথা নত করবো না। ৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী যে কোন ধরণের সহিংসতা রোধে জেলা পুলিশ প্রস্তুুত রয়েছে। সভায় সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, নির্বাচনে কেউ জয়ী হবে, কেউ পরাজিত হবে, এটা বাস্তবতা ও মেনে নিতে হবে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতির পরিবেশ সৃষ্টিকরা আমাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কমিশন কোন ধরণের ছাড় দেয়নি।
নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সবাই আপনাদের পাশে আছে। আচরণবিধি শতভাগ মেনে চলতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে কোন অবহেলা হবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সাথে নিয়ে যা যা করণীয় তা-ই করা হবে। নির্বাচনী এলাকায় অনুমতি ব্যতীত কোন যানবাহন চলবে না। ভোট গ্রহণের ৩২ ঘন্টা আগ পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা করা যাবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফুন নাহারের সভাপতিত্বে, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা এ.কে.এম গোলাম মোর্শেদ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মোঃ আরিফ হোসেন, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাছান, বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার, আনসার ভিডিপি’র জেলা কমান্ড্যান্ট এএইচএম সাইফুল্লাহ হাবীব, সিএমপি’র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ নুরুল ইসলাম সিদ্দিক, বিজিবির সহকারী পরিচালক উপেন্দ্র নাথ হালদার, বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হারুন মোল্লাহ, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল-আমিন হোসাইন, র্যাবের ডিএডি মোহাম্মদ মনির হোসেন, লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রাশেদুল ইসলাম ও বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
সভায় চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীগণ সুষ্ঠু নির্বাচন বিষয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ