জেলা প্রশাসকে নির্দেশ অমান্য করেই ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ফসলি জমি নষ্ট করে দিনে রাতে চলছে মাটি বিক্রির মহোৎসব। উপজেলা প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় নির্বিঘ্নে অবৈধ ট্রাক্টর ট্রলি গাড়ীতে বিক্রিত মাটিগুলো বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
বুধবার ১২ জুন বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বানা ইউনিয়নের দক্ষিণ শিরগ্রাম মৃত আব্দুল ওয়াজেদ খানের ছেলে সাইদুর রহমান সেন্টু খান মাঠের মধ্যে কৃষি জমি কেটে পুকুর বানাচ্ছে। মাটি ব্যবসায়িরা স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পায় না।
বুড়াইচ ইউনিয়নে জয়দেবপুর গ্রামে স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ি ইব্রাহীম ও পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলা চতুল গ্রামে আব্দুল্লা দিনে রাতে নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের এমন কর্মকাণ্ড। এদিকে রাত হলে সদর ইউনিয়নে লাঙ্গুলিয়া বাইশার ডাঙ্গায় শুরু হয় মাটি কাটা । রাতে দিনে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় টলিতে মাটি, বালু বহন করতে দেখা যায়।
এতে এতে করে একদিকে যেমন দিন দিন ফসলি জমি কমে যাচ্ছে অন্যদিকে অবৈধ ট্রলির তাণ্ডবে ধ্বসে যাচ্ছে সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা এবং কাঁচা সড়কগুলো। দিনে এবং রাতে অতিরিক্ত ট্রলি চলাচল করার কারনে পাকা ও কাঁচা সড়কগুলোতে প্রচুর ধুলো ময়লার সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে স্থানীয় জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবন যাপনে নিদারুণ কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
ধুলাবালিতে তাদের বাড়ি ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও সামান্য বৃষ্টি হলেই ট্রলি গাড়ী হতে খসে পড়া মাটি হতে কাঁদার সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে ঘটে দূর্ঘটনা।
জমির মালিক সাইদুর রহমান সেন্টু খা বলেন,পুকুর কাটতে সব ঝামেলা ইব্রাহীম মেটাবে।প্রশাসন, পুলিশ,সাংবাদিক সকলের সাথে সমন্বয় করে কাটতে বলেছি।না করলে পুকুর কাটতে দিবো না।
এ বিষয়ে মাটি ব্যবসায়ি ইব্রাহীম সাংবাদিকদের সাথে স্বাক্ষাতের বলেন,মাটি কাটা অনুমতির ইউনিয়ন ও উপজেলা থেকে অনুমতি দিয়েছে।অনুমতি পত্র দেখতে চাইলে বলে ভাই ব্রাদার কাগজ দেখা লাগবে না,দুই একদিন পরে একসাথে বসে মিষ্টি খাবানি।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের নীরবতা অনেক কিছুরই ঈঙ্গিত দেয় বলে স্থানীয়দের দাবি, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন উপজেলা প্রশাসন ম্যানেজ করেই কৃষি জমির মাটি কাটার মহাযজ্ঞ চলছে, এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে খাদ্য সংকটে পড়তে হবে।
এছাড়াও অভিযোগ আছে বিভিন্ন সময় উপজেলা এবং উপজেলার দৈনন্দিন নাগরিক সংশ্লিষ্ট কোন সমস্যা ও প্রয়োজন নিয়ে সাংবাদিকবৃন্দ কোন প্রয়োজনীয় কথা বলতে চাইলে ইউএনও শারমিন ইয়াসমিন সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ করেন না এবং সরাসরি কোন বক্তব্যও দেন না। যার ফলে আইনের ব্যত্যয় এবং সামাজিক সংকট আলফাডাঙ্গাতে প্রকট আকার ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমীন ইয়াছমীনের অফিসের পিয়ন আশরাফ মাধ্যমে স্বাক্ষাতের অনুমতি খরব পাঠালে তিনি অনুমতি দেননি। তার পিয়ন আশরাফ বলেন স্যার এখন ব্যস্ত আছে দেখা করবে না। হোয়াসঅ্যাপ তথ্য দিলে ৭.৩০ টার সময় পর্যন্ত দেখেননি।