চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর ‘পাইন্যা কচু’ মেটায় সবজির চাহিদা বর্ষা মৌসুমে বোয়ালখালীতে বাড়ে ‘পাইন্যা কচুর’ আবাদ। এখানকার কচু বেশ জনপ্রিয়। গত এক দশক ধরে এই কচু রপ্তানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। উপজেলায় উৎপাদিত কচু স্বাদে-গুণে অনন্য হওয়ায় চাহিদা রয়েছে দেশের বাজারে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালখালীতে এ বছর ৩১৫ জন কৃষক ১৫০ হেক্টর জমিতে কচু চাষ করেছেন।
এর মধ্যে পাইন্যা কচু (পানি কচু) ৫০ হেক্টর, স্থানীয় উন্নত জাতের কচু ৫২ হেক্টর, লতিরাজ ২৫ হেক্টর, বারি-১ জাতের কচু ৮ হেক্টর, বারি-২ জাতের কচু ১৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৫৭৫ মেট্রিক টন। বোয়ালখালীর কধুরখীল, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ, পোপাদিয়া, সারোয়াতলী ও আমুচিয়া ইউনিয়নে পাইন্যা কচুর ভালো ফলন হয়। চাষিরা জমি থেকে কচু তুলে সড়কের পাশে সাজিয়ে রাখছেন বিক্রির জন্য।
পাইকারী ব্যবসায়ীরা এসব কচু দরদাম করে নিয়ে যাচ্ছেন। কালাইয়ার হাটে পাইন্যা কচু বিক্রি করতে আনা করলডেঙ্গা তালুকদার পাড়া কৃষক সিরাজ এক খানি ( ৪০ শতক) জমিতে কচু চাষ করেছেন। তিনি বলেন, প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে একসাথে বেশি পরিমাণে কচু তুলতে পারছি না।
সারোয়াতলী ইউনিয়নের বাসিন্দার মফিজরা জানায় ৪ কানি( ৮০ শতক) জমিতে কচু চাষ করেছেন। তিনি কচুর লতি, পোপা (কচুর ফুল), শাক ও কচুর ডগা বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন। তিনি জানান, প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে কচু চাষে। কচু লাগানোর পর এতোদিন লতি, পোপা ও শাক বিক্রি করেছি।
গত সপ্তাহ থেকে কচু তুলে বিক্রি শুরু করেছি। আশ্বিন মাস পর্যন্ত কচু বিক্রি করা যাবে। এতে ৩/৪ লাখ টাকা আয় হবে। প্রতিটি কচু ২৫/৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া ও পাইকারি কচু চরনন্দ্বীপ,খরণদ্বীপ,করলডেঙ্গ,আমুচিয়া,সারোয়াতলী ও পোপাদিয়া ইউনিয়ন থেকে কচু নিয়মিত পাইকাররা কিনে নগরের রিয়াজউদ্দীন বাজারে বিক্রি করি।
সেখান থেকে ঢাকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বোয়ালখালীর কচু রপ্তানি করেন ব্যবসায়ীরা। ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কচু উৎপাদনে বোয়ালখালীকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ।
তিনি বলেন, কচু চাষিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দেওয়া হয় সহায়তা ও সার্বিক পরামর্শ। বোয়ালখালীতে সাধারণত মুখিকচু, পানিকচু ও লতিকচু- এই ৩ ধরনের কচু চাষ হয়ে থাকে। তবে পানিকচু ‘পাইন্যা কচু’ বেশি জনপ্রিয়। চাষিরা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় কচু সরবরাহ করেন।