আলফাডাঙ্গা পৌরসভার টিএনটি সামনে থেকে বাকাইল মেইন রোড পর্যন্ত ৫৬০ মিটার কার্পেটিং সড়ক। ছবি: ডব্লিউ এস বি নিউজ
‘আপনারা আসছেন? আপনাদের মতো আরও সাংবাদিক আসছেন, কই কিছুই তো হয় না। শুনছি সাংবাদিকরা গেলে নাকি ঠিকাদার টাকা দেয়। টাকা খাইয়া সবাই চুপ থাকে। আপনেরাও কি সেই পদের সাংবাদিক নাকি? শুনেন, ঠিকাদার সড়কটির কার্পেটিং করার সময় পুরোনো ইট, খোয়া ও নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়া সড়কটি সংস্কারের সময় সঠিকভাবে রোলিং না করে তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করেছেন।
ফলে তিন দিন পার না হতেই পা দিয়ে ঘষা দিলে রাস্তায় জায়গায় জায়গায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে আগের মতো খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তায় প্রত্যক্ষদর্শী আসা লোকদের জিজ্ঞেস করছিলাম, আপনারা তো অনেক রাস্তা দেখেছেন , এমন রাস্তা আরও দেখেছেন? তারা বলেন, এমন রাস্তা আর দেখেন নাই।’ এই কথাগুলো বলছিলেন আলফাডাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী শাহ আলম মিয়া।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌরসভা ২নং ওয়ার্ড টি এন টি অফিসের সামনে উপজেলা বাউন্ডারি পাশ দিয়ে বাকাইল কুচিয়াগ্রাম মেইন রাস্তা পর্যন্ত সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে গত ১২ আগষ্ট ২০২৪ রাতে । এরই মধ্যে হাত দিয়ে টানলে, পা দিয়ে ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুরু থেকেই সড়কটিতে নিম্নমানের
কাজ হচ্ছিল। বাধা উপেক্ষা করেই কাজ অব্যাহত রাখেন ঠিকাদার।
আলফাডাঙ্গা পৌরসভার এল,জি,সি,আর,আর,পি কোভিড-১৯ প্রকল্পে ২০২২১-২২ অর্থবছরে ৫৮ লক্ষ ১৭ লাখ ৪৬৯ টাকার কাজটি পান মেসার্স এমএম এন্টারপ্রাইজ।টিএনটি’ মোড় থেকে বাকাইল রোড ৫৬০ মিটার কার্পেটিং রাস্তা এবং হিদাডাঙ্গা সুইচ গেট হতে লাকন মোল্যা গরু ফার্ম পর্যন্ত ২০০ মিটার আর,সি,সি রাস্তা।
মঙ্গবার( ১৩ আগষ্ট) দুপুরে শ্রীরামপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। বিটুমিনও কম দেওয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে এলাকার লোকজন সড়কের বিভিন্ন স্থানে হাত দিয়ে টেনে, পা দিয়ে ঘষা দিয়ে কার্পেটিং উঠে যাওয়ার দৃশ্য দেখান।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহ আলম মিয়া মুক্ত খবরকে বলেন, ‘কার্পেটিং কাজ শেষ হওয়ার পরের দিন সড়কের কার্পেটিং উঠতে শুরু করে। কয়েক মাস পরে সড়কটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে। সরকার অর্থ ব্যয় করে ঠিকই; কিন্তু সঠিকভাবে কাজ হয় না। এ যেন কাজ না করেই সরকারি টাকা খাওয়ার ধান্ধা। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই নতুন করে কার্পেটিং করার জন্য।’
মোটরসাইকেল আরোহী কাজল সরকার সাংবাদিকদের দেখে কাছে এসে জানান, ঠিকাদার এখানে ১০০ টাকার জায়গায় ৫০ টাকাই খেয়ে ফেলেছেন। তাই এই সড়কের কাজ শেষ না হতেই এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, সরকারের এমন দুর্নাম করবেন না। দ্রুত সড়কটি সঠিকভাবে সংস্কারের ব্যবস্থা করুন। কাজ শেষ হতে না হতেই কার্পেটিং উঠে গেল কেন?
পৌর সভা ইন্জিনিয়া জাকারিয়া আলম হকের ভাষ্য,আপনাদের অভিযোগ পাওয়ার পর সড়কটির কার্পেটিংয়ের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। কাজে অনিয়ম হয়েছে।রাতে কাজ করেছে, ডাষ্ট ও বিটুমিন কম দেওয়ায় পাথর খুলে যাচ্ছে।ঠিকাদারকে বলেছি কার্পেটিং উঠিয়ে নতুন করে কার্পেটিং কাজ করার জন্য।
এক প্রশ্নের জবাবে ঠিকাদার মির্জা আব্বাস মিলন বলেন,ঢালাওভাবে যে বলছে সব রাস্তা নষ্ট হচ্ছে, আসলে তা নয়। যে যে যায়গায় নষ্ট হচ্ছে আমি ঠিক করে দেবো।আরো বলেন ‘রাতে কাজ শেষ করেছে ,বিটুমিন বেশি পড়েছে, একটু এদিক-সেদিক হতে পারে।কিছু ত্রুটি আছে,কি কারণে হয়েছে বুজতে পারছি না,মিস্ত্রীকে আসতে বলেছি। পরে ঠিক করে দেওয়া হব