ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকিব নসরুল্লাহকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার সন্ধ্যার দিকে বিভিন্ন ফেসবুক পেইজ ও আইডি থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র উল্লেখ করে এ তথ্য ছড়ানো হয়। তবে শিক্ষা মন্ত্রনালয় সংশ্লিষ্টদের দাবি এমন কিছুই হয় নি এটা নিতান্তই গুজব। এদিকে গুজবের বিষয়টি স্থানীয় উপাচার্য প্রার্থীরা ইচ্ছাকৃত ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছেন বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক-প্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রার্থীরা ইচ্ছাকৃত ভাবেই এই গুজব ছড়িয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়াচ্ছেন। সাবেক উপাচার্য বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়োগ পেয়েছিলেন। পুনরায় বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হোক এটা অনেকেই চান না৷ একারণেই তাদের কেউ হয়তো গুজব রটিয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে ঘোলা জলে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে।
এদিকে গুজবে নাম ছড়িয়ে পড়া সেই উপাচার্য প্রার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নকিব নসরুল্লাহ বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি আমার নিকট আসে নাই। আমি এসকল বিষয়ে কিছু জানিও না।
এদিকে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগ পেয়েছেন এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়লে রাত সাড়ে আটটার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে প্রধান ফটকের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ আশপাশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীও দেখা যায়। একইসাথে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ফেসবুক লাইভেও যেতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আন্দোলনের সময় যে সকল শিক্ষকরা আমাদের সহপাঠীদের জেল থেকে ছাড়িয়ে এনেছে, সে সকল শিক্ষদের আমরা উপাচার্য হিসেবে চাই। আমরা শহীদ জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইরের কাউকে উপাচার্য হিসেবে দেখতে চাই না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক যোগ্য শিক্ষক রয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, শুরুতে যে আইডি থেকে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে তথ্যটি ছড়ানো হয় সেই আইডিটি ছাত্রদলের এক কর্মীর বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। এছাড়া মানববন্ধন কারীদেরও বিএনপি পন্থী উপাচার্য প্রার্থীরা নামিয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ছাত্রজনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর গত ৮ আগস্ট ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ই-মেইলের মাধ্যমে শিক্ষা সচিব বরাবর পদত্যাগ পত্র প্রেরণ করেন ইবির ১৩তম উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। এরপর থেকে ইবির এই শীর্ষ পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ