ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় দূ্র্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষককে স্বপদে বহাল রাখার চেষ্টাশ ইউএনও 'র বিরুদ্বে অভিযোগ আন্দোলনকারি শিক্ষার্থীদের।তার পদত্যাগের দাবিতে ইউএনও'র কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দুই দিন বিক্ষোভ। পরে তার কার্যলয়ে নিয়োগ বাণিজ্য সহ দূ্র্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বরখাস্ত আদেশপত্র নিতে এসে খালি হাতে ফেরত আন্দোলনকারি শিক্ষার্থীরা।
ইউএনওর বিরুদ্ধে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে বাচানোর চেষ্টা, এমনটাই দাবি শিক্ষার্থীদের।
৫ সেপ্টেম্বর( বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় শিরগ্রাম বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে এমন ঘটনা ঘটেছে।
বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণশুনানিতে গিয়ে ইউএনও আশ্বাস দিলেন সাময়িক বরখাস্ত সহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য যাবতীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের। কিন্তু কথা রাখলেন না ইউএনও, কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই শিক্ষার্থীদের পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন নিজ বাসভবনে।
কয়েকদিন যাবৎ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলীর দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ করে আসা শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকা সাবেক শিক্ষার্থী আবু সাইদ শিকদারকে প্রধান শিক্ষক ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে নির্মম ভাবে পিটিয়ে জখম করে এতে করে শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়। এই হামলার বিচার এবং দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবিতে উপজেলা কার্যলয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন ইয়াসমিন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বরখাস্তর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আগত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরত পাঠায়।
পরবর্তীতে একই দিন বিকাল ৪ টায় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী অভিবাবক এবং শিক্ষক কর্মচারীর উপস্থিতিতে গন শুনানিতে আর্মি, পুলিশ সাথে নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সহ উপস্থিত হন ইউএনও।
এসময় সকলের সামনে দফতরি নিয়োগে ৮ লক্ষ টাকা লেনদেনের স্বীকারোক্তিমূলক একটি ভিডিও এবং বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের থেকে এস এসসি পরীক্ষার টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দেওয়া বাবদ আর্থিক লেনদেনে স্বীকারোক্তির তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক শিক্ষার্থীদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে হামলার সত্যতা পাওয়ার পরে দোষী প্রমাণিত হলে প্রকাশ্যে বরখাস্তের আশ্বাস দেন ইউএনও। সাময়িক না পূর্ণাঙ্গভাবে বরখাস্তের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আবারো পদত্যাগে স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা।
এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়লে পদত্যাগের আশ্বাস দিয়ে চার প্রতিনিধি দলকে(ছাত্র-ছাত্রী) উপজেলা কার্যালয় এসে বহিষ্কারের আদেশপত্র নিতে নির্দেশ দিয়ে স্কুল ত্যাগ করেন। শিক্ষার্থীরা বিচার না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রধান ফটকে তালা মারে।
ইউএনও অফিসে এসে ৬ জন প্রতিনিধির দল এসে দেখা করলে কথাবার্তা পরে স্থায়ী বহিষ্কার আদেশ দিতে চান না এবং সাময়িক বহিষ্কার এক ঘন্টা পরে দিতে রাজি হন বলে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।
এরপরে ইউএনও কোন কথা না বলে কার্যালয় ত্যাগ করে বাসায় চলে গেলে সিএ'র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে বলেছে স্যার লেখা চলমান।
প্রতিনিধি দলের শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলেন চলমান আন্দোলন গত দুই সেপ্টেম্বর ইউএনও স্কুলে গিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর তার কার্যালয় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।
অফিসে এসে দশটা থেকে একটা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর বিক্ষোভ শুরু করলে বাসা থেকে এসে আমাদের সাথে কথা বলে, এক দুইদিনের মধ্যে তাকে বরখাস্ত করা হবে বলে আশ্বস্ত করে আমাদের স্কুলের ফেরত পাঠায়। দুই দিনে স্কুলে না যাওয়ায় তার কার্যালয়ে পুনরায় ৫ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ শুরু করলে একই দিনে তিনটায় উপস্থিত হয়ে গণসনানী করে দোষী হলে স্থায়ী বরখাস্ত করা হবে বলে কথা দেন। তিনটায় গিয়ে গনশুনানিতে সিদ্ধান্ত দিতে গড়িমসি করলে জনরষের কবলে পড়ে। পরে তার কার্যালয়ে চারজন প্রতিনিধিকে পাঠিয়ে বহিষ্কারের আদেশ আনতে বলে ওইখান থেকে পুলিশ আর্মি সহযোগিতায় স্থান ত্যাগ করে। সন্ধ্যায় অফিসে এলে উনার মতামত পাল্টে ফেলে স্থায়ী ও সাময়িক বহিষ্কার কোনটাই দেবে না।সর্বশেষ অফিস থেকে তড়িঘড়ি করে চলে গেলে সিএ'র থেকে থেকে জানতে পারলাম কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে।
সুমাইয়া আরো অভিযোগ করেন আইয়ুব আলী স্যার,টুনু কাজি কয়েক দফা ওনার সাথে দেখা করে টাকা দিয়ে ওনাকে ম্যানেজ করেছে। এখন আমাদের ভয়-ভীতি দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করে চেষ্টা করছে। আমরা উনার বিচার চাই।
এদিকে আহত আবু সাইদের ভাই হাবিব শিকদার জানাই আমার ভাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তাকে নির্মম বাবে হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে যখম করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোজাম্মেল হক বলেন,অভিযোগ পেয়েছি মঙ্গলবারে গার্লস স্কুলের ভেনু হয়েছে। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ শুনা হবে।তবে উপজেলায় স্কুল মাদরাসা টাকার বিনিময় নিয়োগ বাণিজ্য অনিয়ম,ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে থাকি।যেকোনো কারণে বিগত দিনে করতে পারিনি, এখন সময় এসেছে কথা বলার,দোষীদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আইযুব হোসেন জানান, আমার বিরুদ্ধে একটি মহল শিক্ষার্থীদের দিয়ে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ তুলেছে।ওখানে দুইটি গ্রুপ আছে,আমি এক গ্রুপে প্রতিহিংসা শিকার হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াটি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন ইয়াসমিন জানান ৩ সেপ্টেম্বরের পরে শিক্ষা নীতি গেজেটে দোষী হলেও স্থায়ী ও সাময়িক বহিষ্কারের আদেশের কোন নিয়ম নেই। তবে দ্রুত তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ