মেহেরুবান হাবিব, লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধে কলেজ ছাত্রদের চোখ উৎপাটনকারী দুর্বৃত্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বাউড়া ও লালমনিরহাটের শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের আয়োজন করেন। শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দেন। কলেজ ছাত্রের চোখ উৎপাটনকারী দুর্বৃত্তরা এখনও কলেজছাত্র ও তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ছাত্রদের। এসময় তারা দুর্বৃত্তদের জামিন বাতিল করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
একটি চোখ হারানো কলেজছাত্র আনিসুর রহমান (১৮) মানববন্ধনে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার একটি চোখ কেড়ে নেওয়া হয়েছে, আমি এখনও হুমকি পাচ্ছি। আমরা আতঙ্কিত। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই।’ ‘জমি দখলকারীদের পুনরায় আক্রমণের ভয়ে আমরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পরছি না,’ আনিসুর এমসটি জানিয়ে বলেন ‘আমি, আমার বাবা-মা, দুই ছোট ভাই সবসময় নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছি।’
পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের মফিজুল ইসলাম ও আনজু আরা বেগমের ছেলে কলেজছাত্র আনিসুর রহমান পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা পুনম চাঁদ ভুতুরিয়া কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তার দুই ছোট ভাই সাজ্জাদ রহমান (১৩) সপ্তম ও হাবিবুর রহমান (৭) দ্বিতীয় শ্রেনিতে পড়ছে।
আনিসুর রহমান বলেন ,”আমাদের গ্রামে আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা জোরপূর্বক আমাদের জমি দখলের জন্য আসেন। তারা আমাকে ধারালো ছুরি দিয়ে আমার ডান চোখে আঘাত করে এবং চোখটিেউপড়ে ফেলে দেয়। এখন আমি এক চোখ নিয়ে বেঁচে আছি।”
পুলিশ জানায়, ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর পাটগ্রাম উপজেলার নবীনগর গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় কতলেজছাত্রের চোখ উৎপাটনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রের বাবা মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর পাটগ্রাম থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫-১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
কলেজছাত্রের বাবা মফিজুল ইসলাম বলেন, “আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে চিহ্নিত জমি দখলকারীরা আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমাদের তিন ছেলে ঠিকমতো স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না।’
মফিজুল ইসলাম জানান, তিনি ২০১৩ সালে ৯ শতাংশ জমি কিনে তাতে ফসল চাষ করে আসছিলেন। ভূমিদস্যুরা হঠাৎ করে জমির মালিকানা দাবি করে জমি দখল করে নেয়। ’আমি আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে হয়তো জমি ফিরে পাব কিন্তু আমার ছেলের চোখ আর ফিরে পাব না ‘ তিনি বলেন।
পাটগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, মামলায় ১০ জনকে আসামি করে ইতোমধ্যে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। মামলাটি এখন বিচারাধীন। হুমকির অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবার একটি জিডিও করেছে।