স্টাফ রিপোর্টার:‘মরণোত্তর চক্ষুদান’ করার ঘোষণা দিয়েছেন ডিমলার সংবাদকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী আলমগীর হোসেন। চলতি সাপ্তাহে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতিতে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছেন তিনি।
হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত- এমন প্রশ্নে আলমগীর বলেন, আমি নিজেকে অন্যের কাজে লাগাতে চাই। জন্ম নিলাম, বাঁচলাম, মরে চলে গেলাম- এটা চাই না। আমি নিজেকে ব্যবহার করতে চাই।
এই স্বেচ্ছাসেবক আরও বলেন,আমি আসলে কেন জন্ম নিয়েছি, কেন বেঁচে আছি, আমার মৃত্যু কি শুধুই একটা মৃত্যু হবে? এসব চিন্তা থেকেই সিদ্ধান্ত নেয়া। আমি মৃত্যুর পরেও কারো উপকারে আসতে চাই। বেঁচে থেকে মানুষের কতোটুকু উপকারে আসতে পেরেছি জানি না। তবে চেষ্টা করেছি মারা যাওয়ার পরে যেন কারো উপকারে আসতে পারি।
কারো অনুপ্রেরণায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে সাংবাদকর্মী আলমগীর বলেন, ‘কারো অনুপ্রেরণায় নয়, তবে কোথাও আমি অবশ্যই শুনেছি, এ বিষয়ে তথ্য পেয়েছি। সেই জায়গা থেকে মনে হয়েছে আমি নিজেকে মৃত্যুর পরেও কাজে লাগাতে পারি৷
তার ভাষায়,যতটুকু জানি বর্তমান সমাজে স্বেচ্ছাসেবীদের পরলোভী ভাবেন অনেকেই,আমি চাই জনমনে ধারণার পরিবর্তন আসুক। কিন্তু আমার কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য ও গবেষণা ছিল না। গত এক বছর ধরে যতটুকু সম্ভব ধর্মীয় জ্ঞান নেওয়া, গবেষণা করা, বাংলাদেশের আইনে এটার নিয়ম কানুন বিষয়ে জেনেছি। তারপরই সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করেছি।
নিজের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে পরিবারের অনুমতি নিয়েছেন জানিয়ে আলমগীর বলেন, ‘আমার পরিবারের জায়গা থেকে একটু প্রশ্ন ছিল, উনাদের যখন সামাজিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকেই বিষয়টি জানিয়েছিলাম। পরে উভয়ে অনুমতি দিয়েছেন।’
এর আগে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সংবাদকর্মী আলমগীর লেখেন,’দেশের আইন মোতাবেক ও ধর্মীয় পরিপূর্ণ জ্ঞান নিয়ে, আমি আলমগীর হোসেন(সমাজসেবক) সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায়, কারো দ্বারা প্ররোচিত না হইয়া, আমার মৃত্যুর পর আমার চক্ষু দৃষ্টিহীন ব্যক্তির উপকারে কিংবা চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণার কাজে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতিতে চক্ষুদাতা হিসেবে রেজিঃ সফল করিয়াছি। মৃত্যর পর চোখের মত মূল্যবান অঙ্গ প্রতিস্থাপনে কারও অন্ধকার জীবনে আলো ফিরে বাঁচুক। সবার কাছে আমার সুন্দর জীবন-যাপন ও ভালো আমল করে স্বাভাবিক মৃত্যুর দো’য়া কামনা করছি। আগামীর পথ সহজ কাটুক, ভালোবাসায় কাটুক, দোয়া রাখবেন।