রিয়াদুন্নবী রিয়াদ নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের গঙ্গাচড়ার আলমবিদিতর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও কর্মচারীর অবহেলায় গর্ভবতী রিতা রানী ও তার গর্ভে থাকা সন্তানের মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগ করেছেন রিতা রানীর পরিবার।রিতা রানী বদরগঞ্জ উপজেলার নিরাঞ্জন রায় এর স্ত্রী। বাচ্চা প্রসব করার জন্য তার বাবার বাড়ি আলমবিদিতর ইউনিয়নের মন্ডলের হাট (হিন্দুপাড়া) গ্রামে আসেন। গত ২৬ তারিখ ভোরে প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে নিয়ে যায় স্থানীয় ইউপি পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে।নিহতের বড় ভাই সঞ্জয় সরকার বলেন, একজন এমবিবিএস ডাক্তার যখন বলে যে সিজার করতে হবে। এমন রিপোর্টের কথা আমারা ইউপি পরিবার পরিকল্পনার কেন্দ্রে পরিবার কল্যান পরির্দশিকা, শ্রীমতী ডলি রানীর তত্ত্বাবধানে থাকা ফরিদা কে জানাইলে তিনি রিপোর্ট না দেখেই বলে সমস্যা নেই । এখানে নরমালে ডেলিভারি হবে ( প্রসব হবে)।সে আমাদের কথাকে গুরুত্ব না দিয়ে বাচ্চা প্রসবের জন্য সকাল ৭ থেকে দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত চেষ্টা করেন। বেলা ১১ টার পর খুব অসুস্থ দেখে আমরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসি ।ফরিদা বেগম অ্যাম্বুলেন্স দাঁড় করিয়ে রেখেও চেষ্টা চালিয়ে যায়।যখন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়, তখন পরিবার কল্যাণ পরির্দশিকা ,শ্রীমতী ডলি রানীর তত্ত্বাবধানে থাকা ফরিদা খাতুন রেফার করেন।আমরা তার নির্দেশিত ক্লিনিক এ নিয়ে যাই। ক্লিনিক গেলে মৃত বাচ্চা বের হয়। ক্লিনিকে ভর্তি অবস্থায় ৬ দিন পর আমার বোন( রিতা রানী) ও মারা যায়।নিহত রিতা রানীর পিতা রাধাকান্ত বলেন, আমার নবজাতক নাতিসহ মেয়ে হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।নিহত রিতা রানীর স্বামী বলেন, আমার নবজাতক সন্তান এবং স্ত্রী হত্যার সঠিক বিচার চাই। আমার মত আর কারো জীবনে যেনো এরকম দূর্ঘটনা ঘটানোর সুযোগ না পায়। পরিবার কল্যাণ পরির্দশিকা, শ্রীমতী ডলি রানীর তত্ত্বাবধানে থাকা ফরিদা খাতুন বলেন, আমার কাছে এসেছিল, আমি চেষ্টা করেছি মাত্র। অবস্থা বেগতিক দেখে এখান থেকে রংপুরে পাঠিয়েছি।আলমবিদিতর ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ পরির্দশিকা, শ্রীমতী ডলি রানী বলেন, আমি বিষয়টি জানতাম না।আর কাজ করতে গেলে এরকম দুই একটা ঘটনা ঘটতেই পারে।সুস্বাস্থ্য ক্লিনিকের (রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের, মেডিকেল এসিস্ট্যান্টের দায়িত্বে থাকা স্ক্রীন বিডি আউটডোরে কর্মরত) ডাঃ জ্যোতি ভৌমিক বলেন, আমি গর্ভবতী রোগির অবস্থা দেখে অপারেশন করতে চাইনি। দেখেই আমার মনে হয়েছিল গর্ভজাত সন্তান মারা গেছে। রোগীর অভিভাবকদের অনুরোধে প্রসুতিকে বাঁচাতে ডাবল স্বীকারোক্তি নিয়ে অপারেশন করি। অপারেশন করলে দেখা যায় নবজাতক শিশুটি অনেক আগেই মারা গেছে। অতঃপর ছয়দিন পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রস্তুতি রিতা রানীরও মৃত্যু হয়। রিতা রানীর মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞেস করলে ডাঃ জ্যোতি ভৌমিক বলেন, ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনার স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রসুতির প্রসবের অপচেষ্টা কারণে সর্বশেষ তাকেও বাঁচানো য়ায়নি।গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রেজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।