অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. ইয়াকুব আলী। তিনি এখন উপ-উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। অতীতের সব অভিযোগ আড়াল করে ভিড়েছেন উপাচার্যের কাছেও। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্যতা করে বাগিয়ে নিয়েছেন পরিবহন প্রশাসকের পদ। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন জাতীয়তাবাদী ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা।
তথ্যমতে, গত ২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কিন্তু তখন নতুন সরকার দায়িত্বে আসার পর থেমে যায় এই তদন্ত কমিটির কার্যক্রম।
অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে যোগসাঁজশ করে তদন্ত কমিটির কার্যক্রম থামিয়ে দেন তিনি। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস করাসহ আওয়ামী শাসনামলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, সারাদেশের ফাজিল-কামিল মাদ্রাসাগুলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত থাকাকালিন নরসিংদী জেলার একটি মাদ্রাসার নিয়োগ পরীক্ষায় অধ্যাপক ইয়াকুব এক্সপার্ট হিসেবে ছিলেন। তিনি এক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে আগেই তাকে প্রশ্ন পাইয়ে দেন। এই তথ্য জানাজানি হলে আমলে নেয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তখন পরিক্ষার্থীর কাছে থাকা প্রশ্ন এবং নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন হুবহু মিলে যায়। এসময় অধ্যাপক ইয়াকুবকে আটকে রাখা হয়েছিল- যা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট শহরের সকলের জানা। পরে প্রশ্ন জালিয়াতি করার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে এবং ভবিষ্যতে এমন অপকর্মের জড়াবেন না মর্মে মৌখিক অঙ্গীকার দিয়ে সে সময় রক্ষা পান ড. ইয়াকুব।
অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র জালিয়াতিসহ নানা অপকর্মে জড়িত শিক্ষক ইয়াকুবকে পরিবহন প্রশাসক থেকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, তাকে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিলে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী কেউ মানবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথিতযশা কোন অধ্যাপককে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদ উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়ার দাবি জানান তারা।
বিভাগ উল্লেখ না করার শর্তে শরিফুল ইসলাম নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক প্রথিতযশা শিক্ষক রয়েছেন। তাদের মধ্যে থেকে উপ-উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানাই। একই সঙ্গে অধ্যাপক ইয়াকুবকে পরিবহন প্রশাসক থেকে অব্যাহতি দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ড. ইয়াকুব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নানান সুবিধা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ