শিরোনাম:
ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে ছাত্রলীগ নেতা বঙ্গমাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি ঢাবি অধ্যাপক রোকনুজ্জামান বিশ্বম্ভরপুরে লাকড়ির ট্রাকে ভারতীয় চিনি আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদী থেকে দুই দিন পর নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার  আলতাফ মিয়া কতৃক মিথ্যা মামলা ও নাগরিক টিভির সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মুস্তাফিজুর রহমান বাবুর সংবাদ প্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন নওগাঁ আস্তান মোল্লা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ সড়ক সেক্টর সংস্কার কমিশন গঠনের দাবী যাত্রী কল্যাণ সমিতির বোয়ালমারীতে সোনালীকা ডে, সার্ভিস ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত আলফাডাঙ্গায় ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত জামায়াত ক্ষমতায় আসলে জাতির মালিক নয় সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে—– আমীরে জামায়ত ডা. শফিকুর রহমান

নওগাঁ আস্তান মোল্লা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

সুবীর দাস নওগাঁ
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৪
5.8kভিজিটর

নওগাঁর আস্তান মোল্লা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে বাণিজ্য, গায়েবী খাতে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ , পদত্যাগ করার পরেও কলেজের দাপ্তরিক নথিপত্র হেফাজত করে রাখা, কলেজের গভর্নিংবডির সভাপতির অনুমতি ছাড়াই একক স্বাক্ষরে বিধি বহির্ভূতভাবে এডহক (আহ্বায়ক) কমিটি গঠনের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মচারীরা। 

আজ সোমবার দুপুরে আস্তান মোল্লা ডিগ্রি কলেজ শিক্ষক মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহীনা আখতার। এ সময় অন্যদের মধ্যে আস্তান মোল্লা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নিতাই চন্দ্র বসাক, সঞ্জিবন কুমার অধিকারী ও মীর আবু হায়াৎ মো. মোস্তফা কামাল, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক দিলরূবা লাকী, আনিছার রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

লিখিত বক্তব্যে শাহীনা আখতার বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মাহবুবুল ইসলামের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি শিক্ষক-কর্মচারীরাও একাত্মতা ঘোষণা করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে হওয়া আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ আগস্ট কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সোহেল রানা বরাবর স্বেচ্ছায় অধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেন মাহবুবুল ইসলাম। এর পর থেকে তিনি কলেজে আসা বন্ধ করেন।

পরবর্তীতে গত ২ অক্টোবর শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে আলোচনার ভিত্তিতে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সোহেল রানা ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহীনা আখতারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। 

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, মাহবুবুল ইসলাম ২০১৬ সালে আস্তান মোল্লা ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। তিনি নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল হক কমলের নিকট আত্মীয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির প্রভাব খাটিয়ে গত আট বছরে ১২ জন অনার্স শিক্ষক, দুইজন ল্যাব সহকারী ও একজন নৈশ্যপ্রহরী নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তিনি কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করতেন না।

তার সময়ে কলেজের বিভিন্ন বিভাগে ১২ জন শিক্ষক, দুইজন ল্যাব সহকারী ও একজন নৈশ্যপ্রহরী নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়ার সময় অনুদানের কথা বলে অধ্যক্ষ মাহবুবুল ইসলাম লাখ লাখ টাকা আত্মাসাৎ করেন। এছাড়া ক্রয় কমিটির স্বাক্ষর, কোটেশন ও রেজ্যুলেশন ছাড়াই মাহবুবুল ইসলাম একক স্বাক্ষরে কলেজের উন্নয়নের নামে গায়েবী খাতে গত ৮ বছরে ২৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ৯ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহীনা আখতার। অভিযোগ পাওয়ার পর মাহবুবুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।

শাহীনা আখতার বলেন, অধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করার পরেও মাহবুবুল ইসলাম কলেজের নথিপত্র কুক্ষিগত করে রেখেছেন। অধ্যক্ষ কক্ষের একটি আলমারিতে ছাত্র-ছাত্রীদের সনদপত্র, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের কাগজ, রেজ্যুলেশন খাতা, শিক্ষক-কর্মচারী হাজিরা খাতাসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংরক্ষিত আছে। কলেজ থেকে এইসব গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সরিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে গত ১০ অক্টোবর গুন্ডাবাহিনী নিয়ে কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষ কক্ষের তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। সন্ত্রাসী হামলার বিষয় তাৎক্ষণিকভাবে কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানানো হয়।

জেলা প্রশাসক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বারবার মৌখিকভাবে আলমারীর চাবি চাওয়ার পরও তিনি আলমারীর চাবি প্রদান করেননি। একপর্যায়ে প্রশাসনের চাপের মুখে গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) কলেজে এসে আলমারি খুলে কাগজপত্র বের করে দেন। কিন্তু চাবি হস্তান্তর করেননি। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় আলমারিতে থাকা সনদপত্র, নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র উইপোকা খেয়ে ফেলায় শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। 

তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের প্রজ্ঞাপন অনুসারে জেলা প্রশাসক এ কলেজের সভাপতি। সেই মোতাবেক সভাপতি অনুমোদন নিয়ে এডহক কমিটি গঠন করার কথা। কিন্তু তিনি সভাপতি অনুমোদন ছাড়াই একক স্বাক্ষরে বিধি বহির্ভূতভাবে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় থেকে এডহক কমিটি পাশ করে এনেছেন। কারণ হাজিরা খাতা অনুযায়ী তিনি গত ২১ আগস্ট থেকে কলেজে অনুপস্থিত। সুতরাং তার সাক্ষরে কোনো কিছু গঠিত হওয়া মানে অবৈধ। 

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
কপিরাইট ©২০০০-২০২২, WsbNews24.com এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত।
Desing & Developed BY ServerNeed.Com
themesbazarwsbnews25
x