নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের উত্তর পানাপুকুর গিড়িয়ারপাড় দাখিল মাদ্রাসার সুপার জালাল উদ্দিন একই পদে দুইজন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়াসহ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
গত ২০১৪ সালে সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে যোগদান করার পর দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলেছেন সুপার জালাল উদ্দিন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নৈশ্য প্রহরী মনোয়ারুল ইসলাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাদ্রাসা অধিদপ্তর ঢাকায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুপার জালাল উদ্দিন ও সাবেক সভাপতি গোলাম আজিজ আল ইমরানের যোগসাজসে ৫টি পদে নিয়োগ বাণিজ্যে ৪৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানে জমি বন্ধক (বর্গা) বাবদ প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় সরকারি বরাদ্দের প্রনোদনার ৫ লাখ টাকা পেলেও শুধু মাত্র শিক্ষকদের ২০% টাকা দিয়ে বাকী ৪ লক্ষ টাকা এবং প্রতিষ্ঠানের সেশন ফি, পরীক্ষার ফি সহ প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ অভিযোগও রয়েছে সুপার জালালের বিরুদ্ধে।নৈশ্য প্রহরী মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত ১২সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে এম এল এস এস (পিয়ন ) পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি 'দৈনিক আখিরা' পত্রিকায় প্রকাশ করলে আমি উক্ত পদে আবেদন করি এবং ৪ মার্চ ২০১৪ সালে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে নৈশ্য প্রহরী পদে যোগদান করি এবং আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সততার সাথে পালন করে আসছি।
জনবল কাঠামো ২০১৮ (সংশোধিত) ২০২০ অনুযায়ী প্রতিটি দাখিল মাদ্রাসায় আরো ২ টি নতুন পদ সৃষ্টিত হয়।যার ১টি পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও অপরটি আয়া পদে নিয়োগ দিতে পারবে প্রতিষ্ঠান কিন্তু সুপার জালাল উদ্দিন বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নীতিমালা বহির্ভূত ও গোপনেই গত ১ নভেম্বর ২০২০ সালে নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগ প্রদান করেন ।
এরপর আবারো একই কৌশলে গোপনে সভাপতি ও সুপার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে গত ১৭ জুলাই ২০২৪ তারিখে পূণরায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীর স্থালে নৈশ্য প্রহরী পদে আব্দুর রাজ্জাক নামক জনৈক ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান করেন যা নীতিমালা বহির্ভূত ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ নিয়োগ প্রদান করে এমপিও 'র জন্য অধিদপ্তরে পাঠালে নীতিমালা বহির্ভূত হওয়ায় আব্দুর রাজ্জাকের এমপিও হয়নি।
নৈশ্য প্রহরী মনোয়ারুল ইসলাম অনিয়মের বিষয়টি জানতে পেরে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়োগ বাতিলে জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ ব্যাপারে সুপার জালালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি অভিযোগে গত ৭ নভেম্বর এলাকাবাসী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ তার অপসারণ ও শিক্ষার্থীদের প্রণোদনার টাকার দাবিতে সুপারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
বিকেলে গঙ্গাচড়া মডেল থানা পুলিশ সুপার জালালকে উদ্ধার করেন । সুপার ও সভাপতির দূর্নীতির বিষয়ে ঐ এলাকার সাবেক শিক্ষার্থী ও অবিভাবক সাহেব আলী বলেন, আমাদের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানটি ইমরান সভাপতি হওয়ার পর জালালকে সুপার নিয়োগ দিয়ে দূর্নীতি করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, দাখিল মাদ্রাসার এক একর এবং ফোরকানিয়া মাদ্রাসার ৪ একর জমি ৩৫- ৪০ লক্ষ টাকায় বন্ধক (বর্গা)রেখেছে সুপার জালাল ও সভাপতি ইমরান। এ ব্যাপারে সাবেক সভাপতি গোলাম আজিজ আল ইমরানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,সব জমি পূর্বের কমিটি বন্ধক (বর্গা) রেখেছে আমরা সেই বন্ধকের উপরে শুধু বাড়তি টাকা নিয়ে মামলা চালাইছি।
একই বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার জালাল বলেন, আমি চারটি কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছি, মামলা চালানোর তাগিদে কিছু বন্ধকী ( বর্গা দেওয়া)জমির উপরে বাড়তি টাকা নিয়েছি।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ