নওগাঁয় তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা (তৃউস) এর নামে নানান অনিয়ম-দুর্নীতি ও প্রতারণার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বেশকিছু ভুক্তভোগী ।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১০ ঘটিকাই আদমদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ এর পাশ্ববর্তী এক কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা সংস্থাটির নামে নানান অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, উক্ত সমিতিতে তারা দীর্ঘদিন ধরে সদস্য হিসেবে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করেছেন। সংস্থাটির নিয়ম অনুযায়ী ঋণ গ্রহণের সময় জামানত স্বরুপ ঋণগৃহীতারা তাদের ব্যাংক আ্যাকাউন্ট চেক প্রদান করেন, যা তাদের ঋণ পরিশোধ হবার পরে ফেরত দেবার কথা। তবে ঋণ পরিশোধ করেও দীর্ঘদিন ধরে ঘুড়ে ঘুড়ে তারা তাদের ব্যাংক চেক ফেরত পাননী। পরবর্তীতে তাদের চেকগুলো ডিজঅনার এর মাধ্যমে ঋণ খেলাপির দ্বায়ে কাওকে মামলা ও কাওকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা (তৃউস)। কেউবা জামিনদার হয়েও মামলা খেয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে হতাশাগ্রস্থ্য হয়ে দ্বাড়ে দ্বাড়ে ঘুড়ছেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভেগী রাজু আহমেদ বলেন, আমি তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা (তৃউস) থেকে ঋণ নিয়ে তা যথাযথ সময়ে পরিশোধ করে আমার জমা রাখা ব্যাংক চেক তাদের থেকে ফেরত চাই। তারা ফেরত দিবে বলে মাসের পর মাস আমাকে ঘুড়ায়। অবশেষে সেই চেক এর মাধ্যমে তারা আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
সংস্থাটির এমন প্রতারণার শিকার আমরা ১৫ জন একত্রিত হয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসক, সেনাবাহিনী ক্যাম্প, নওগাঁ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করি। এবং এর পাশাপাশি সমগ্র দেশবাসি ও সরকার এর কাছে বিষয়টি তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। আমরা প্রত্যেকে তৃউস এর প্রতারণায় বিপদগ্রস্থ্য। আইনানুগ তদন্তের মাধ্যমে আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নাজমা বলেন, আমি তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। ৩ মাস ১০ দিনে তাদের ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা সুদ সহ শোধ করি, পরে কিস্তির লোক অডিট এর কথা বলে আমার থেকে জমার বই নিয়ে যায়, চেক ফেরত চাইলে বলে পরে দিবো। এরপর কয়েকমাস তাদের পিছু ঘুড়ে চেক পাইনী। পরে হঠাৎ তারা আমাকে ৩ মাস পর পর মোট তিনটি উকিল নোটিশ পাঠায়।
পরে শুনি আমার নামে মামলা হয়েছে। চলতি মাসের ২৫ তারিখে আমার জামিন নিতে হবে। এ বিষয়ে তৃউস এর মালিকের সাথে দেখা করলে তিনি নতুন করে শীট দেখিয়ে বলেন যে আমার নামে ঋণ নেওয়া হয়েছে। অথচ আমি সে ঋণটা কিন্তু পরিশোধ করেছি। তারা মিথ্যা মামলা আমাকে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনে কান্না জরিত কণ্ঠে অন্যান্য ভুক্তখোগীরা তাদের সংক্ষিপ্ত ঘটনার বিবৃতি তুলে ধরেন। এদিকে পলাশ নামে একজন ভুক্তভোগী জামিনদার হয়েই তার নামে ৪ লাখ টাকার চেকের মামলা দেওয়া হয়েছে বলে জানান।
সাম্প্রতিক নওগাঁয় ''দোয়েল সমিতি', বন্ধু মিতালি ফাউন্ডেশন সহ বেশ কয়েকটি সমিতি সাধারণ সদস্যদের শত শত কৌটি টাকা আত্মসাৎ করে অফিস ফেলে পালানোর ঘটনায় ইতমধ্যে অন্যান্য সমিতির সদস্যদের মাঝে হতাশা বিরাজ এর মাঝে তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা (তৃউস) এর এমন কর্মকাণ্ডে হতবাগ নওগাঁর নাগরিক সমাজ।
ভুক্তভোগীদের পাশাপাশি প্রশাসনের কাছে দ্রুত এর সঠিক তদন্দের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবী জানিয়েছে সচেতন মহল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ