ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. মনিরুজ্জামান মনিরের অবহেলায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে । বৃহস্পতিবার (১৯.১২.২৪) বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের ছোলনা গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের মেয়ে আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কুলসুম বৃহস্পতিবার দুপুরে পেট ও মাথা ব্যাথার পিড়া নিয়ে হাসপাতালে আসে। তবে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান মনির তাকে ভালোভাবে চেকআপ না করে কিছু ওষুধ লিখে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে নেয়ার ১ ঘন্টা পর ওই শিক্ষার্থী বেশি অসুস্থ হয়ে পরে।
পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত আবারও হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাকে দেখে ফরিদপুর মেডিকেলে রেফার্ড করেন। রেফার্ডের ১৫ মিনিট পরেই বোয়ালমারী হাসপাতালে ওই রোগী মারা যায়। একই দিনে বিকেলে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে বেদেনা বেগম নামের আরেক রোগী হাসপাতালে আসেন। ইমার্জেন্সির ডাক্তার না পেয়ে গেটের সামনে অটোভ্যানের উপরে আধাঘন্টা পরে মারা যায়।
শিক্ষার্থীর বাবা মো হাবিবুর রহমান জানান, আমার মেয়ে বুধবার রাতে পোলাও ও মুরগীর রোস্ট খেয়ে ছিল। খাওয়ার পরে রাতেই বমি করলে তাকে খাবার স্যালাইন খাওয়ানো হয়। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে অসুস্থতার কারণে তাকে হাসপাতালে আনা হয়। ডা. মনিরুজ্জামান মনির তাকে চেকআপ না করে মেয়ের মুখের কথা শুনে ওষুধ লিখে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাড়িতে আসার পরে তার মুখ দিয়ে ফেনা ও লালা বের হলে আবারও তাকে হাসপাতালে আনি। পরেই আমার মেয়ে মারা যায়। এটা সম্পূর্ণ চিকিৎসকের অবহেলায় আজ আমার মেয়ে মারা গিয়েছে। আমি ডাক্তারের অবহেলা বিচারের দাবী করি। এভাবে ডাক্তারদের অবহেলায় যেন আর কোন তাজা প্রাণ অকালে না ঝড়ে যায়।
ডা. মনিরুজ্জামান বলেন, দুপুরে একটি অল্পবয়সী মেয়ে পেটে ও মাথায় ব্যাথা নিয়ে আসছিল। পরে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। আমি ভালোভাবে তাকে দেখেছি। এমকি পেটে হাত দিয়ে বুঝে ওষুধ দিয়েছিলাম। আমাকে যেভাবে বলেছে আমি সেভাবে ওষুধ দিয়েছি। তবে ওই মেয়েটার অন্য কোন সমস্যা থাকতে পারে। সে সমস্যায় সে মারা যেতে পারে। আমি ডিউটি শেষ করে চলে গিয়েছিলাম।
ভারপ্রাপ্ত দায়ীত্বে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কে এম মাহমুদুর রহমান বলেন, এমন ঘটনা ঘটে থাকলে এটা আসলে দুঃখজনক ব্যাপার। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।