আমতলীতে ১৬ টি প্রতারনা মামলার আসামী ভন্ড দরবেশ ফারুক হাওলাদার ও নও মুসলিম রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ক্লুবিহীন প্রতারনা মামলার আসামী ফারুক ও তার সহযোগীকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার সকালে আমতলী থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে কথিত ৬৫ গ্রাম স্বর্ণালংঙ্কার ও বার লক্ষ তের হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
জানাগেছে, বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার দক্ষিণ ধামুরা গ্রামের কাদের হাওলাদারের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক হাওলাদার।
তিনি এলাকার দরবেশ হিসেবে পরিচিত। ভন্ড দরবেশ সেজে ফারুক দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারনা করে আসছে। গত ১০ বছর আগে তার সহযোগী হিসেবে বিপুল হাওলাদারকে সঙ্গে নেয়। তাকে তিনি কথিত নও মুসলিম সাজিয়ে নাম পরিবর্তন করে রফিকুল ইসলাম নাম দেয়। পরে ফারুক হাওলাদারের বাবার নামে তার বাবার নাম মিলিয়ে জাতীয় আইডি কার্ড করেন। এরপর তারা হিন্দু-মুসলমানদের নানা ভাবে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে আসছে। গত ২৭ ডিসেম্বর আমতলী পৌর শহরের মিঠুন ঘোষের নিঃসন্তানী বোন স্কুল শিক্ষিকা শিউলী রানীকে সন্তান হওয়ার লোভ দেখিয়ে ২৪ ভরি স্বর্নালংঙ্কার প্রতারনা করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মিঠুন ঘোষ বাদী হয়ে গত বুধবার আমতলী থানায় অজ্ঞাত আসামী করে মামলা দায়ের করেন। আমতলী থানার এসআই আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা প্রতারক সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ ফারুক হাওলাদারকে সনাক্ত করেন। উজিরপুর পুলিশের সহায়তায় প্রতারক ফারুকের বাড়ীতে বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান চালায়। পরে তাকে ও তার নও মুসলিম ভাই রফিকুল ইসলামকে তার বাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের দেয়া তথ্য মতে তার বাড়ী থেকে ৬৫ গ্রাম কথিত স্বর্ণালংঙ্কার ও বার লক্ষ ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। ওইদিন দুপুরে পুলিশ তাদেরকে আমতলী থানায় নিয়ে আসে।
প্রতারক ফারুক হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৬ টি প্রতারনা মামলা এবং রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪ টি মামলা রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। উল্লেখ্য নও মুসলিম রফিকুল ইসলামের অপর নাম বিপুল হালদার। তার বাবার নাম প্রফুল্ল হালদার।
মামলার বাদী মিঠুর ঘোষ বলেন, আমার নিঃসন্তানী বোন শিউলি রানীকে সন্তান লাভের আশা দেখিয়ে প্রতারক ফারুক ও বিপুল হালদার ২৪ ভরি স্বর্ণালংঙ্কার নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমতলী থানায় মামলা করেছি।
পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তার দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে।
আমতলী থানার এসআই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আজিুজুর রহমান বলেন, ক্লবিহীন একটি প্রতারনা মামলা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারক ফারুক হাওলাদার ও তার সহযোগী রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ফারুক এলাকার দরবেশ হিসেবে পরিচিত। তিনি মানুষকে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা ও স্বর্ণালংঙ্কার হাতিয়ে নেয়। সাবেক ইউপি সদস্য ফারুক হাওলাদার দরবেশের বেশ ধরে আড়ালে তিনি প্রতারনা করে আসছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, প্রতারক ফারুক হাওলাদারের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ৬৫ গ্রাম কথিত স্বর্ণালংঙ্কার ও বার লক্ষ তের হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রতারক ফারুক হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৬ টি এবং কথিত নও মুসলিম রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪ টি প্রতারনা মামলা রয়েছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী) সার্কেল মোঃ রুহুল আমিন বলেন, সক্রিয় প্রতারনা চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।